কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন।—ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে আম আদমি পার্টি (আপ)-র সঙ্গে জোট না হলে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন।
নিজের অবস্থান আগেও শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন মাকেন। ভোটের টিকিট না পেলেও দিল্লিতে আপ-কেই তিনি সমর্থন করবেন। ভোটের আগে কংগ্রেস নেতার এই ‘গোঁ ধরা’ ছবিটা রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরে ‘সঙ্ঘাত’কে আরও সামনে এনে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, দিল্লিতে আপ-কংগ্রেস সমঝোতা না হওয়ার বিষয়েও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাকেন।
দিল্লিতে দু’দলের জোট নিয়ে জটিলতা চলছে গত কয়েক দিন ধরেই। সেই সঙ্গে চলছে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপের পালা। আপ নেতারা জোট না হওয়ার জন্য দায়ী করছেন কংগ্রেসকেই। আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে খোদ আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবালের গলায়। জোট না হওয়ার জন্য কংগ্রেস সভাপতির কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন তিনি।
আপের সঙ্গে জোট করার বিরোধী শিবিরের অন্যতম প্রধান ছিলেন দিল্লির কংগ্রেস সভাপতি শীলা দীক্ষিত। সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, কেজরীবাল রাহুলকে জোটের প্রস্তাবই দেননি। এই প্রশ্নের জবাবে গত সোমবার দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত উপেক্ষাই করেন কেজরীবাল। বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছি। শীলা দীক্ষিত সেই স্তরের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী নন।’’
আরও পড়ুন: ভোটে অংশ নিতে আর্জি গুরুং-রোশনের, মামলা কলকাতা হাইকোর্টে পাঠাল শীর্ষ আদালত
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লোকসভা ভোটের শুরু থেকেই জোট করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার একটা পরিকল্পনা চলছিল। সূত্রের খবর, রাহুলের কাছে গিয়ে জোটের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন শীলা দীক্ষিত। কিন্তু শীলা-বিরোধী অজয় মাকেন-সহ দিল্লি কংগ্রেসেরই সব প্রাক্তন সভাপতি, এমনকি সিংহভাগ জেলা সভাপতিও রাহুলকে চিঠি লিখে আপের সঙ্গে জোট করার আর্জি জানান। মাকেনের নাম না করে শীলা শিবিরের অভিযোগ, আপ-এর সঙ্গে সমঝোতা করে কংগ্রেসের অনেক নেতাই নিজেদের আসন বাঁচাতে চাইছেন। আসন ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বলেই রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ বলছেন। সেটা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দু’দলেরই। তার উপর আপের সঙ্গে শীলা-মাকেনের এই ‘অন্তর্দ্বন্দ্বে’ রাজ্যে কংগ্রেসের ভোটবাক্সে প্রভাব পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন দলের অনেকেই।
২০১৪-য় দিল্লিতে সাতটি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপি সবকটিতেই জিতেছিল। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, আপ ও কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের যোগফলের হিসেবে সব কটি আসনেই পিছিয়ে ছিল বিজেপি। সেই ফলাফলে দিকে লক্ষ্য রেখেই এ বারের নির্বাচনে পরস্পরের হাত ধরার পরিকল্পনা করেছিল আপ-কংগ্রেস। জোট নিয়ে আলোচনাও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়।