পাপ্পু যাদব
বিহারের নির্বাচন মানেই বাহুবলীদের দাপাদাপি। এ বার কি সেই ‘মিথ’ ভেঙে বেরিয়ে আসছে বিহার, এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য-রাজনীতির অলিন্দে।
রাজ্যের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই এতদিন ভোটে জেতার জন্য কমবেশি বাহুবলীদের ব্যবহার করে এসেছে। কোনও দল তাঁদের প্রার্থী করে, কেউ বা বাহুবলীদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ভোট জেতার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার জমানায় বাহুবলীদের বিরুদ্ধে গোটা বিহার জুড়েই সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা প্রতিবাদ করছেন। আর সেই চাপেই বাহুবলীদের ‘অচ্ছে দিন’-এ এ বার এখনও ভাঁটার টান।
গত বার মাধেপুরায় আরজেডির টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন পাপ্পু যাদব। এ বার বিজেপি, জেডিইউ ঘুরে ব্যর্থ মনোরথ পাপ্পু কংগ্রেসের কাছে দরবার করছেন। তাঁর স্ত্রী রঞ্জিতা রঞ্জন অবশ্য কংগ্রেসের সাংসদ। একই অবস্থা মোকামার নির্দল বিধায়ক অনন্ত সিংহের। একদা নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ অনন্ত জেডিইউ থেকে ধাক্কা খেয়ে আরজেডি বা কংগ্রেসে ভিড়বেন ভেবেছিলেন। কিন্তু তেজস্বী যাদব সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও বাহুবলীকে তাঁরা প্রার্থী করবে না। মুঙ্গেরের লোক জনশক্তি পার্টির সাংসদ বীণাদেবী বাহুবলী সুরজভান সিংহের স্ত্রী। এ বার তিনি টিকিট পাবেন কিনা তাতে সংশয়। সিওয়ানের প্রাক্তন আরজেডি সাংসদ, বাহুবলী সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী হিনা সাহেব ২০১৪ সালে আরজেডি প্রার্থী ছিলেন। আরজেডিও এ বার হিনা সাহেবের টিকিট নিয়ে নীরব। একই অবস্থা বৈশালীর এলজেপি সাংসদ রামকিশোর সিংহ, আরার প্রাক্তন জেডিইউ বিধায়ক সুনীল পাণ্ডে বা বেতিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক রাজেন তিওয়ারির। গোপালগঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ লালুপ্রসাদের শ্যালক সাধু যাদবের অবস্থাও তথৈবচ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কোনও রাজনৈতিক দলই তাঁদের টিকিট দিতে রাজি হচ্ছে না। কেন? জেডিইউয়ের এক নেতার কথায়, এ বার থেকে প্রত্যেক প্রার্থীকে তাঁর ‘অপরাধের তালিকা’ জানাতে হবে। শুধুই নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় নয়, কমিশনের নির্দেশ, বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে অপরাধের খতিয়ান। বিহার ইলেকশন ওয়াচের সংযোজক রাজীব কুমারের কথায়, ‘‘একদিকে সোশ্যাল মিডিয়া অন্য দিকে আমাদের মতো সংগঠনের লাগাতার প্রচার মানুষকে, চেতন করে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিরুদ্ধ-প্রচারের ভয়েই মূলত রাজনৈতিক দলগুলি বাহুবলীদের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে।’’
এখন দেখার কতদিন এই পরিবর্তন ধরে রাখতে পারে বিহার!