সাংবাদিক বৈঠকে কানহাইয়া কুমার। রবিবার পটনায়। পিটিআই
মহাজোটে জায়গা না হলেও বেগুসরাইয়ে সিপিআইয়ের প্রার্থী হবেন কানহাইয়া কুমার। গত কাল বেগুসরাইয়েই সিপিআইয়ের রাজ্য সমিতির বৈঠক হয়েছে। সেখানেই রাজ্য সম্পাদক সত্যনারায়ণ সিংহ-সহ দলের বড় নেতারা হাজির ছিলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলার পরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়ার নামেই দলের তরফে শিলমোহর দেওয়া হয়। সিপিআইয়ের প্রার্থীকে সমর্থন করছে সিপিএম এবং সিপিআইএমএল।
এই কেন্দ্রেই এনডিএ-র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের নাম। আসন বদল হওয়ায় কিছুটা নারাজ ছিলেন গিরিরাজ। এখনও পর্যন্ত যা চিত্র, তাতে বেগুসরাইয়ে এ বার লড়াই হতে চলেছে ভূমিহার সম্প্রদায়ের দুই প্রার্থী কানহাইয়া এবং গিরিরাজের মধ্যে। তবে এই কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, মহাজোটের তরফে বেগুসরাই আসনটি পড়েছে আরজেডি কোটায়। এখনও এই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেনি তারা। আরজেডি প্রার্থী ঘোষণার পরে এই কেন্দ্রে ভোট-যুদ্ধের ছবিটি পরিষ্কার হবে। রাজনীতির লোকজনের মতে, বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের চাপেই সিপিআইকে মহাজোট থেকে সরানো হয়েছে। কোনও ভাবেই কানহাইয়া যাতে বিহার থেকে লড়তে না পারেন, তার ব্যবস্থা করেছিলেন তেজস্বী। প্রথম থেকেই বেগুসরাই আসনটি ছাড়তে রাজি ছিলেন না তিনি। সিপিআইকে আসন দেওয়ার কথা দিয়েও শেষ সময়ে পিছিয়ে গিয়েছেন লালুপ্রসাদ। তাতে পিছু হটছে না সিপিআই। দলের রাজ্য সম্পাদক সত্যনারায়ণবাবু আজ বলেন, ‘‘কানহাইয়াই আমাদের প্রার্থী। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।’’
বেগুসরাই ভূমিহার সম্প্রদায়-প্রধান এলাকা। ১৯৮০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত নির্বাচিত দশ জন সাংসদের মধ্যে ন’জনই ছিলেন ভূমিহার সম্প্রদায়ের। মাঝে ২০০৯ সালে জেডিইউয়ের মুনাজির হোসেন জিতেছিলেন। জাতিভিত্তিক জনগণনা না-হলেও এই লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় চার লক্ষ ৭৫ হাজার ভূমিহার সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছেন বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া প্রায় আড়াই লক্ষ মুসলমান ভোটার, প্রায় দু’লক্ষ কুর্মি-কুশওয়াহা এবং দেড় লক্ষ যাদব সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছেন। ২০১৪ সালে প্রবল মোদী হাওয়াতেও বেগুসরাইয়ে সিপিআই প্রার্থী রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ ১ লক্ষ ৯২ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তবে জয়ী বিজেপি প্রার্থী ভোলা সিংহ পান ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ভোট।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গিরিরাজ-কানহাইয়ার লড়াইয়ে ভূমিহার ভোটব্যাঙ্ক ভাগ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাতে আরজেডির সুবিধা হওয়ার কথা। বিরোধীরা মনে করছেন, বেগুসরাইয়ে লড়াই হবে মোদী বনাম মোদী-বিরোধীদের মধ্যেই। প্রথম রাউন্ডে তেজস্বীর কাছে হারলেও শেষ লড়াইয়ে বাজিমাত করতে পারেন কানহাইয়া।