কংগ্রেসে যোগ দিলেন উদিত রাজ। ছবি: পিটিআই।
নিজের নামের আগে থেকে ‘চৌকিদার’ পাকাপাকি মুছেই রাহুল গাঁধীর দলে যোগ দিলেন দিল্লিতে বিজেপি সাংসদ উদিত রাজ। দাবি করলেন, বিজেপি আপাদমস্তক দলিত-বিরোধী।
গত কালই ছিল দিল্লিতে মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। দিল্লি উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্র থেকে উদিতকে প্রার্থী না করে গায়ক হংসরাজ হংসকে টিকিট দেয় বিজেপি। বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন উদিত। বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টাও হয়। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আজ রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। পণ করেছেন, নিজের শক্তিতে দেশের ১৫-২০টি আসনে হারাবেন বিজেপিকে। আর দিল্লিতে তাঁর বিদায়ী আসনে হারাবেন বিজেপি প্রার্থীকেও।
দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীবালের সমঝোতা হয়নি। কিন্তু রাহুল গাঁধী এখনও বার্তা দিচ্ছেন, সমঝোতা পাকা করার এখনও সময় আছে হাতে। প্রার্থী দিলেও তা প্রত্যাহারের জন্য এখনও দু’দিন সময় বাকি। বিজেপিকে পরাস্ত করতে জোট হওয়াটা জরুরি। এরই মধ্যে আজ বিজেপি ছেড়ে উদিত কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় পরিস্থিতির আরও বদল হবে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শীলা দীক্ষিত বলেন, “যে আসন আমরা হয়তো জিততাম না, উদিত রাজ আসার পর আমরা নিশ্চিত জিতব।” উদিতকে আজ এআইসিসি দফতরে এনে সাংবাদিক সম্মেলন করায় কংগ্রেস। সেখানে বিজেপির ‘দলিত-বিরোধী’ মনোভাবের ‘মুখোশ’ খুলতে উদিত টেনে আনেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের প্রসঙ্গও। বলেন, “২০১৪ সালে রামনাথ কোবিন্দ প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। তিনি চুপ ছিলেন, রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। আমিও মূক ও বধির হলে আজ হয়তো প্রধানমন্ত্রীও হয়ে যেতাম। কিন্তু আমি ১০-১৫ বার দলের অবস্থানের বিপক্ষে গিয়েছি। দলিতের স্বার্থে বারবার সরব হয়েছি।”
এর পরেই এক এক করে পরিসংখ্যান দিয়ে উদিত দেখান, বিজেপি মুখে দলিত-ভোটের কথা বললেও আখেরে তাদের জন্য কিছুই করেনি। কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, “সাবিত্রী ফুলে থেকে উদিত রাজ— বিজেপির দলিত নেতারা বারবার অসন্তোষ প্রকাশের পরেও তাঁদের টনক নড়েনি। বিজেপি আসলে দলিতদের দমনের ষড়যন্ত্র করছে। এখন এও বোঝা যাচ্ছে, মোদী বিজেপির সকলকে জোর করে ‘চৌকিদার’ করেছেন।”
দল ছাড়ার আগে বিজেপি উদিতকে ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল। আজ তিনি কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর তারা দাবি করছে, এক স্টিং অপারেশনে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল উদিতের বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাস ধরে তিনি দর কষাকষিও করছিলেন। শুধু দিল্লি নয়, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে আরও চারটি আসন চাইছিলেন। নিজেকে বড় দলিত নেতা হিসেবে মেলে ধরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বিজেপি তাতে রাজি হয়নি।