—ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই রোজ সুকৌশলে সেনাকে জনসভায় টেনে আনছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। এই অভিযোগ নিয়ে আজ ফের কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। দশটি দলের নেতাদের নিয়েও কমিশনে আর এক দফা নালিশ জানিয়ে এসেছে তারা। যদিও কমিশনের কাছে কংগ্রেস বারবার নালিশ জানালেও মোদী-শাহদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কমিশনে দরবার চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কংগ্রেস তাই সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে। কংগ্রেসের মতে ভোট-বিধি এখন ‘মোদী-বিধি’-তে পরিণত হয়েছে।
বেকারত্ব, কৃষক দুর্দশার মতো মৌলিক বিষয়গুলির বদলে বিজেপি এ বারের ভোটে ‘দেশভক্তি’কে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। সুকৌশলে সব মঞ্চেই নেতারা তুলছেন সেনার কথা। অথচ সেনাকে কোনও ভাবে ব্যবহার না-করার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। এরই মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ বিজেপি দফতরে গিয়ে সাত জন প্রাক্তন সেনাকে দলে যোগ দেওয়ান। তাঁদের পাঁচ জন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ও এক জন অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার। এর সঙ্গে দেশভক্তি ও মোদীকে জুড়ে নিয়ে প্রচারও চলেছে যথারীতি।
অমিত শাহ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সাত জন বিশিষ্ট প্রাক্তন সেনাকর্তা বিজেপিতে যোগ দিলেন। দলে তাঁদের স্বাগত জানাই। এঁরা গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে মাতৃভূমির সেবা করেছেন। দেশ যে নিরাপদ হাতে রয়েছে— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের উপরে প্রাক্তনীদের এই আস্থাই তার আর একটি প্রমাণ।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
চলতি মাসেই প্রায় দেড়শো জন প্রাক্তন সেনা-কর্তা রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেখানেও রাজনীতিতে সেনা-প্রসঙ্গ ব্যবহার করা আপত্তি তোলা হয়েছে। সেই চিঠি নিয়ে অবশ্য বিতর্ক তৈরি হয়। অনেক প্রাক্তন সেনা জানান, তাঁদের নামের উল্লেখ থাকলেও এমন চিঠিতে তাঁরা সম্মতি দেননি। আবার অনেকে বলেন, তাঁদের সম্মতি নিয়েই লেখা হয়েছে ওই চিঠি। তার পর থেকে বিজেপিও প্রাক্তন সেনাদের পাশে টানার চেষ্টা জোরদার করে। যার সূত্র ধরে আজ সাত জন প্রাক্তন সেনা কর্তাকে সরাসরি দলেই যোগ দেওয়ানো হল।
কিন্তু মোদী-শাহের বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে আজ ফের কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। দশটি দলের নেতাদের নিয়েও কমিশনে আর এক দফা নালিশ জানিয়ে এসেছে তারা। কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি পরে বলেন, ‘‘গত পাঁচ সপ্তাহে ৩৭ বার কমিশনের কাছে গিয়ে নালিশ জানানো হয়েছে। কমিশন এর আগে যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু একই ধরনের অভিযোগ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও। অথচ কমিশন এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করেনি। তারা কেন চোখ বন্ধ করে রাখছে?’’
অভিষেকের মতে, “ভোট-বিধি এখন মোদী-বিধিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আমাদের বারবার আশ্বাস দিয়েছে, পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু করা হচ্ছে না। আর তার ফলে মোদী-শাহের মতো নেতারা আরও উৎসাহ পাচ্ছেন। ভোটে আরও ফায়দা তুলছেন। কমিশনের এই নীরবতার ফলে আমরা আগামী সোমবার আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।”