‘নমো টিভি’ ঘিরে বিতর্ক চলছেই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম-পদবির আদ্যক্ষরে তৈরি নমো টিভি সম্প্রচারিত হচ্ছে গত এক সপ্তাহ ধরে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রের দাবি, এই চ্যানেল সম্প্রচারের জন্য অনুমোদন চেয়ে কখনওই কোনও আবেদন আসেনি তাদের কাছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও ছাড়পত্রও পায়নি নমো টিভি। ওই সূত্রের মতে, তথ্য ও সম্প্রচার আইন অনুযায়ী এই চ্যানেল বেআইনি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের এক আধিকারিকের মতে, ভারতীয় সম্প্রচারের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম একটি চ্যানেল সরকারি অনুমোদন ছাড়া, এমনকি, অনুমোদনের জন্য আবেদন জানানোর আগেই দেখানো শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ আবেদন জানায়নি বলে চ্যানেলটির মালিকানা সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যাচ্ছে না। এটি খবরের চ্যানেল না অন্য কোনও চ্যানেল, তা-ও স্পষ্ট নয়। অনুমোদিত চ্যানেলের তালিকায় এটির নামও দেখাচ্ছে না।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘হঠাৎ মনে হল তিনি রাজা হয়ে গেলেন। হঠাৎ মনে হল উনি একটি টিভি চ্যানেল বানাবেন। নমো টিভি হয়ে গেলে। হঠাৎ মনে হল নমো দোকান হয়ে গেলে। নেহরু কোট নিজের নামে চালিয়ে দিল। নিজের নামে সিনেমাও তৈরি করছে।’’ একই ভাবে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আজ বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর জন্য কোনও ব্যবস্থাই যে নিতে পারছে না, নমো টিভি তার আরও একটা জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।’’ নমো টিভি নিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে আজ সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন। ভোটের আগে অনুমোদনহীন এই চ্যানেলের সম্প্রচার নিয়ে চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা এবং নির্বাচনী জনসভা দেখানো হচ্ছে নমো টিভি-তে। উল্লেখযোগ্য, বেশির ভাগ ডিটিএইচ পরিষেবা এই চ্যানেল দেখাচ্ছে। তাই বেআইনি চ্যানেল সম্প্রচারের অভিযোগে ওই পরিষেবাপ্রদানকারী সংস্থাগুলিকে নোটিস পাঠানোর কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক— ওই সূত্রের তেমনই দাবি। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নমো টিভি নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে আজ, শুক্রবারের মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে।
তবে বিতর্কের মুখে ডিটিএইচ পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা টাটা স্কাই আজ জানিয়েছে, নমো টিভি কোনও হিন্দি খবরের চ্যানেল নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আসা এটি একটি বিশেষ পরিষেবা, যার জন্য সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। টাটা স্কাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভোট মরসুমে শুধুমাত্র মোদীর বক্তৃতা এবং বিজেপির সমর্থিত বিষয় দেখাচ্ছে তারা।