—ফাইল চিত্র।
দেশের জীবনরেখা রেল। লোকসভা নির্বাচনের আগে সারা দেশে সেই রেলকে ‘উন্নয়নের মার্কশিট’ হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টার কসুর করছে না নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
রেলে যাত্রী-পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে সরকারি ভূমিকার যাবতীয় প্রচারে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি-সহ বিজ্ঞাপন তো বরাবরই ছিল। ভোট ঘোষণার পরেও রেলের উন্নয়ন যাতে মানুষের নজরে পড়ে, কার্যত তার ব্যবস্থা করতে কাল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে রেলের সব জ়োনকে বিভিন্ন জেলার সদর শহরের স্টেশনে ডিসপ্লে বোর্ড লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব।
২৮ ফেব্রুয়ারি রেলের সব জ়োনের জেনারেল ম্যানেজারকে লেখা চিঠিতে বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে রেলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। পরিকাঠামোর পাশাপাশি উন্নতি হয়েছে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যেরও। সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া সেই সব প্রকল্পের কাজকর্ম ও তথ্য তুলে ধরা দরকার। সেই জন্য সব জেলার সদর শহর সংলগ্ন স্টেশনে ওই সব কাজের খতিয়ান দিয়ে ডিসপ্লে বোর্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে সম্পূর্ণ হওয়া প্রকল্পের ছবি, যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য উন্নত হয়েছে, এমন স্টেশন বা ভবনের ছবি দেওয়া যেতে পারে তাতে।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে ওই কাজ সম্পূর্ণ করতে বলেছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান। তবে রেলের তরফে বসানো ওই বোর্ডগুলিতে কোথাও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি রাখার কথা বলা হয়নি।
রেলকর্তাদের একাংশের মতে, চলতি সপ্তাহে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে ধরে নিয়েই দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান। মাসখানেক আগে বিভিন্ন স্টেশনে মোদীর ছবি-সহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের বিবরণ দিয়ে পোস্টার, ব্যানার ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে স্বচ্ছতা অভিযানের প্রচারেও শোভা পেয়েছে মোদীর মুখ। কিন্তু নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আচরণবিধি বলবৎ হয়ে যাবে। তখন আর ওই সব পোস্টার, ব্যানার রাখা সম্ভব হবে না। সে-ক্ষেত্রে রেলের সাফল্য প্রচারে ভূমিকা নিতে পারে এই নতুন বোর্ড।
‘‘রেল তো বিভিন্ন উন্নয়নের কথা জানিয়েই থাকে। এটা তেমনই। তবে নির্বাচন ঘোষণার আগেই যাতে কাজ শেষ করে ফেলা যায়, সেটা মাথায় রাখতে বলেছেন শীর্ষ কর্তারা,’’ বলছেন রেলের এক আধিকারিক।
রেলের যাবতীয় কাজকর্ম যাতে সাধারণ মানুষও জানতে পারেন, সেই জন্য গত সপ্তাহে নিজের ব্যবহারের ‘ই-দৃষ্টি’ সফটওয়্যারের নাম বদলে ‘রেল-দৃষ্টি’ নামে তা আমজনতার জন্য খুলে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। রেলের কথা সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই সিদ্ধান্তের মতো রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের এই চিঠিও কি তা হলে ভোটমুখী পদক্ষেপ?
সরাসরি জবাব মিলছে না। কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন রেলকর্তারা।