রাহুল-প্রিয়ঙ্কা, বুয়া-বাবুয়ার যৌথ সভা, মোদীকে তাড়া করছে জুটির জোট

প্রধানমন্ত্রী বলে কথা। হরেক রকম প্রোটোকল। হোমরা-চোমরারা পৌঁছে গিয়েছেন। চার দিক মোদী-যোগীর ছবিতে ছয়লাপ। মঞ্চের পিছনেও তিনটি তাঁবু। সেখানে তৈরি হচ্ছে মিনি-পিএমও। মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

কৈরানা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩৩
Share:

চাষের জমিতে ইট পড়ে কেন?

Advertisement

আহা! মোদী নামবে আকাশ থেকে। হেলিকপ্টার দেখো নাই?

তাই বলে তিনখানা বড় বড় গোল?

Advertisement

পুলিশের উপর মহল থেকে নিচু মহল। থিকথিক করছে। কে কাকে স্যালুট করছেন, তাই দিয়ে চেনা যাচ্ছে পদের বহর।

তার মধ্যেই গোবেচারা গোছের জনা কয়েক প্রৌঢ় দেহাতির কৌতূহলী চোখ ভিড় করেছে মঞ্চের পিছনে। সেটাই কৈরানার খুদানা গ্রামের আলপথ। সেখানেই কাল নামবেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রামের জমিতেই তৈরি হচ্ছে তিনটি হেলিপ্যাড।

প্রধানমন্ত্রী বলে কথা। হরেক রকম প্রোটোকল। হোমরা-চোমরারা পৌঁছে গিয়েছেন। চার দিক মোদী-যোগীর ছবিতে ছয়লাপ। মঞ্চের পিছনেও তিনটি তাঁবু। সেখানে তৈরি হচ্ছে মিনি-পিএমও। মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য। ডজনখানেক ‘ব্র্যান্ড নিউ’ ল্যান্ড-ফোন বাক্স থেকে বেরোচ্ছে। হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী নামবেন। তিনটি সভা কাল। প্রথমটি আমরোহায়। তার পরে কৈরানায়। যে কৈরানার উপনির্বাচনে বিরোধী জোট ইতিমধ্যেই কুপোকাত করেছে বিজেপিকে। কিন্তু এটি আবার সহারনপুর জেলার মধ্যে। এই সভার পরেই মোদী উড়বেন দেহরাদূনে সভা করতে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কয়েক দিন আগেই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে সভা করেছেন। মেরুকরণ উস্কে দিয়েছেন। কাল ফের করবেন হলফ করে বলা যায়। কিন্তু তিন দিন পরেই উত্তরপ্রদেশের এই পশ্চিম প্রান্তে মায়াবতী-অখিলেশ দেওবন্দে যৌথ সভা করছেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও কাল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেই রোড-শো করছেন। রাহুলের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাও সামনের সপ্তাহে যৌথ সভা করবেন। ফলে তাড়না মোদীরও। বুয়া-বাবুয়া আর ভাই-বোনের জুটির আগেই বাজি মারতে চাইছেন।

কিন্তু কী করবেন প্রহ্লাদ সিংহ-বিজয় সিংহরা? মঞ্চের পিছনে গ্রামের যে চাষিরা ভিড় করেছেন। চিনিকলে আখ পৌঁছলে দুই হপ্তায় টাকা মেটানোর কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত টাকা পেয়েছেন। তারপর তিন মাস কেটে গিয়েছে, এখনও আখের টাকা পাননি। এ পরিস্থিতি গোটা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। দিল্লি থেকে মেরঠ হয়ে মুজফ্ফরনগর, কৈরানা থেকে সাহারানপুর—ছবিটা একই। ক’দিন আগেই সে কারণে খোদ প্রিয়ঙ্কা তুলেছিলেন বিষয়টি। আখ চাষিদের ১০ হাজার কোটি টাকা এখনও বকেয়া কেন?

বিশ বিঘা জমি প্রহ্লাদের। যোগী আদিত্যনাথ ঋণ মাফ করেছেন। মোদীর ঘোষণা মতো কৃষকদের ২ হাজার টাকাও চলে এসেছে। কিন্তু তিন মাসের আখের দাম এখনও পাননি। পুলিশের ভিড় ঠেলে কৌতূহলী চাষিদের প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘শুনছি, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টাকা না কি ব্যাঙ্কে এসেছে। ভোটের আগেই মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সে টাকা তো আসেনি। এখন আবার অন্য বিপত্তি।’’

কীসের বিপত্তি?

‘‘আরে মশাই, যোগী আসার পর অকেজো গরুকে আর কেউ নিতেই চান না। পাশের গ্রাম রামপুর-মণিহরণে গোশালা তৈরি হবে বলছে সরকার। সেখানেও তেমন কাজ এগোয়নি। অথচ এই গরুই তো এখন ফসল নষ্ট করছে। রাত জেগে এখন গরুর হাত থেকে ফসল পাহারা দেওয়াই আমাদের কাজ। মোদী বলেন, চৌকিদার হতে। মোদী-যোগীর জমানায় আমরা এখন গরুর চৌকিদার!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন