প্রতীকী ছবি।
ভোটের দিন সকাল থেকে সব বাড়িতে যখন উৎসবের আমেজ, তখন তাঁদের বাড়িতে শোকের পরিবেশ। ২০০১ সাল থেকেই ওই অবস্থা। সে বারই মা-বাবা-ভাই-বোন ভোট দিতে গিয়ে শোনেন, তাদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাই ভোট দিতে পারবেন না। বিশ্বজিৎ দেবরা এ বার আশায় ছিলেন। কারণ গত ১১ সেপ্টেম্বর ফরেনার্স ট্রাইবুনাল রায় দিয়েছে, তাঁরা ভারতীয়ই। কিন্তু সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে এবং আমলাদের উদাসীনতায় এ বারও ‘ভারতীয়’ দেব পরিবার ভোট দিতে পারলেন না।
৪৬ বছর বয়সি বিশ্বজিত দেব বা তাঁর দাদা রণধীর দেবই শুধু নন, তাঁদের বাবা রঞ্জিৎ দেবেরও জন্ম শিলচর শহরে। তিনি ডাক বিভাগের চাকরি করে অবসর নিয়েছেন। আমৃত্যু সরকারি পেনশন পেয়েছেন। ২০০১ সালে রঞ্জিৎবাবু প্রয়াত হন। মা সুকৃতি দেব মারা যান ২০১৪ সালে। তাঁরা যে ‘কলঙ্কমুক্ত’ হয়েছেন তা তাঁরা জেনে যেতে পারেননি।
এ বারে ভোট দিয়ে বিশ্বজিৎবাবুরা সেই শোক প্রশমিত করবেন বলে আশায় ছিলেন। তা হল না। যে ভাবে সরকারি খামখেয়ালির ফলে প্রকৃত ভারতীয় হয়েও দু’টি দশক ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে ছিলেন, সেই উদাসীনতায় এ বারও তাঁরা ভোট-বঞ্চিতই রয়ে গেলেন। ভোটার তালিকায় তাঁর নামের পাশ থেকে যে ‘ডি’ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়টাই তাঁকে কেউ জানাননি। নির্বাচন দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাইবুনালের রায় জানার পর প্রক্রিয়া মেনেই তাঁকে ডি-মুক্ত করা হয়েছে। নতুন ভোটার তালিকাতে তার উল্লেখও রয়েছে। বাকি কাজ বুথ লেভেল অফিসারের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শিলচর শহরের ১৩০ নং ভোটকেন্দ্রের বিএলও অনামিকা দেবের বক্তব্য, ‘‘নতুন ভোটার তালিকা পেলেও বিশ্বজিৎবাবুরা যে ‘ডি’-মুক্ত হয়েছেন, তা আমাকে কেউ জানাননি।’’ ‘ডি’ লিখে কেটে দিলে তা যে ডি-মুক্ত বোঝায়, তাও তিনি জানেন না।