রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
বৃষ্টির জন্য উড়তে পারেনি হেলিকপ্টার। তার জন্য সভা বাতিল? মানতে চাননি কংগ্রেস সভাপতি। এসপিজি-কে ডেকে জানিয়ে দিলেন, সড়ক পথেই যাবেন হাইলাকান্দি জেলার পাঁচগ্রামে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের পরামর্শে এসপিজি অবশ্য আগে থেকেই বিকল্পটা ভেবে রেখেছিল। ফলে সমস্যা হয়নি। গাড়িতে দ্রুত বেরিয়ে পড়েন রাহুল গাঁধী। সঙ্গে শিলচরের প্রার্থী সুস্মিতা দেব।
শিলচর বিমানবন্দরে পৌঁছতে অবশ্য তাঁর কোনও সমস্যা হয়নি। সকাল ১১টায় রানওয়ে স্পর্শ করে বিশেষ বিমান। বৃষ্টির সঙ্গে বইছে হালকা ঝড়ও। অভ্যর্থনা জানাতে যাঁরা বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, ভিড় কেমন। বৃষ্টির মধ্যে মানুষ যে খুব বেশি হবে না, খোলামেলাই জানানো হয় তাঁকে। তবু সিদ্ধান্ত নেন, এমন দুর্যোগেও যাঁরা মাঠে অপেক্ষা করছেন, তাঁদের কাছে অবশ্যই যাবেন।
শিলচরের প্রার্থী সুস্মিতাকে সঙ্গে নিয়ে রাহুলের গাড়ি যখন পাঁচগ্রামে পৌঁছায়, তখন বেলা সাড়ে ১২টা। একে বৃষ্টি পড়ছে, অন্য দিকে হেলিকপ্টার বাতিল জেনে অনেকে আগেই মাঠ ছেড়েছিলেন। এর মধ্যে ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সাংবাদিকদের জন্য যে পোডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল, তা ভেঙে পড়ে। এক সাংবাদিক জখম হন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সব মিলিয়ে, অস্বস্তিকর পরিবেশ। কিন্তু রাহুল গাঁধী মঞ্চে উঠতেই সব স্বাভাবিক চেহারা নেয়। আকাশ পরিষ্কার হয়ে আসে। দূরে দাঁড়ানো মানুষজন কাছে আসতে থাকেন। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সবাই মঞ্চের কাছে পৌঁছাতে চাইলেন। প্রথমে সুস্মিতা সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন। পরে রাহুল উঠে দু-চার কথা বলেই স্লোগান দেন, ‘চৌ-কি-দা-র’। জবাব আসে, ‘চোর হ্যায়’। এক বার, দু’ বার, তিন বার। দু’পক্ষেই চড়তে থাকে গলা। এ বার রাহুল জুড়লেন, ‘শুধু চোর নয়, চৌকিদার ভীতুও (ডরপুক)। বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছিলাম। সাহস দেখাতে পারেননি।’
জোট, মহাজোট নিয়ে নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসকে আগে বহু সমালোচনা করেছেন। পাঁচগ্রামে এরই জবাব দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। বললেন, ‘কংগ্রেস একা লড়ছে, একাই জিতবে। দম (সাহস) আছে আমাদের।’
হাইলাকান্দি জেলার পাঁচগ্রাম করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের অন্তর্গত। সেখানে দলীয় প্রার্থী স্বরূপ দাস। স্বরূপের মতো যুবা প্রার্থীকে দিল্লি পাঠানোর আহ্বান জানান রাহুল। তবে বেশি বলেন সুস্মিতাকে নিয়েই। ঘোষণা করেন, কংগ্রেস সরকার গড়লে সুস্মিতা হবেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী। কারণ এরই মধ্যে শিলচরের সাংসদ নিজেকে জাতীয় নেত্রী হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
পরে সুস্মিতাকে সঙ্গে নিয়েই ফেরেন রাহুল। এ বার অবশ্য আর সড়কপথে নয়, আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় কপ্টার ছুটে গিয়েছিল তাঁকে আনতে। সেই কপ্টারেই দু’জন শিলচরে ফেরেন।