ভোটের বাজারে এনআরসি-র কথা চাপা পড়েছিল কিছু দিন। এনআরসি প্রকাশের পর কী হবে, প্রার্থীদের ভাষণে উত্তর খুঁজছিলেন অসমের বাঙালিরা। কিন্তু চিন্তামুক্ত হতে পারেননি মোটেই। তাই ভোট ফুরোতেই অরাজনৈতিক সভা-সমিতি শুরু হয়েছে। তাতে সকলেই এনআরসি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছেন।
এনআরসির দাবিপত্র পূরণের সময় বরাক উপত্যকায় বিভিন্ন সংগঠন সহায়তা-কেন্দ্র খুলেছিল। দাবিপত্র পূরণের সময়সীমা ফুরোলে সবাই কেন্দ্র গুটিয়ে নেয়। একমাত্র এনজিও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা এখনও তা চালু রেখেছে। এরাই আজ সভা ডেকেছিল শিলচরে। সেখানে প্রশ্ন রাখা হয়, এনআরসি-ছুটদের কী হবে এর পর? উত্তর খুঁজতে গিয়ে দুশ্চিন্তাই বেড়েছে। চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশের পর যাঁরা বাদ পড়বেন, ছ’মাসের মধ্যে তাদের ‘ফরেনার্স ট্রাইবুনাল’-এ আপিল করতে হবে। প্রশ্ন হল, সে সময় তাদের কী করে সাহায্য করা যায়। অনেকে বলেন, শুধু নথিপত্র নয়, দাবি জানাতে হবে ভারতীয় সাক্ষ্য আইন যেন কার্যকর করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, সাক্ষী নিয়েও আদালত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু এনআরসি-তে এখনও নথিই একমাত্র বিচার্য। কেউ কেউ জানান, ভুক্তভোগী বিভিন্ন রকমের হবে। দাবি জানানোর পরও যাদের নাম কাটা যাবে। দ্বিতীয়ত, একাংশ দাবিপত্রই জমা করেননি। তৃতীয়ত, অনেকে এনআরসি-তে নাম তোলার আবেদনই করেননি। প্রত্যেকের কথা পৃথক ভাবে ভাবতে হবে। শহরের আইনজীবীরা নানা দিক থেকে এই সবের আইনি ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু উত্তর মেলেনি। শেষে সবাই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমাধানের উপরেই গুরুত্ব দেন। সিদ্ধান্ত হয়, ঐক্যমঞ্চ তৈরি করে এনআরসি প্রকাশের পরই আন্দোলন সূচি তৈরি করে ঝাঁপাতে হবে।