প্রার্থনা: উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সোমবার। ছবি: পিটিআই
গত পাঁচ বছরে দেশ জুড়ে শুধু প্রচারই হয়েছে, কাজ কিছু হয়নি বলে আজ নরেন্দ্র মোদীকে কাঠগড়ায় তুললেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। প্রধানমন্ত্রীকে ‘তপস্বী’ বলে কটাক্ষ করে সনিয়া-কন্যার খোঁচা, তপস্যা রাগ-ঘৃণা দূর করে। কিন্তু মোদীর ঔদ্ধত্য বেড়ে গিয়েছে। প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, কৃষক, যুব সমাজ, ব্যবসায়ী-সহ সর্বস্তরের মানুষ মোদীর আমলে বঞ্চিত।
মহাকালেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে আজ মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন প্রিয়ঙ্কা। প্রথমে তিনি উজ্জয়িনী কেন্দ্রে রোড শো করেন। সেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র শোভা ওঝা বলেন, ‘‘এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মহাকালেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। নেত্রীর রোড শোয়ে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে।’’ রোড শোয়ের সময় কিছু যুবক রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ‘মোদী মোদী’ স্লোগান দিচ্ছিলেন। গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের দিকে হাসতে হাসতে এগিয়ে যান প্রিয়ঙ্কা। তাঁদের সঙ্গে করমর্দন করে সনিয়া-কন্যা বলেন, ‘‘আপনারা আপনাদের জায়গায়, আমি আমার জায়গায়।’’ রতলাম কেন্দ্রে সভায় প্রিয়ঙ্কা কার্যত তুলোধোনা করেন প্রধানমন্ত্রীকে। কংগ্রেস নেত্রীর মতে, মোদী প্রচার-সর্বস্ব। তাঁর কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে শুধু প্রচার হচ্ছে। টিভি, কাগজে বড় বড় প্রচার। আপনাদের মনে হবে, পাঁচ বছরে যা কাজ হয়েছে, তা ৬০-৭০ বছরেও হয়নি। কিন্তু প্রচার আর বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক।’’
প্রচারে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘দিল্লির ‘খান মার্কেট গ্যাং’ মোদীর ভাবমূর্তি তৈরি করেনি, দিল্লির লুটেরারাও নয়। মোদীর ৪৫ বছরের তপস্যাই এই ভাবমূর্তি তৈরি করেছে। তা ভাল হোক বা মন্দ!’’ আজ মোদীর তপস্যা-মন্তব্যকে নিশানা করেন প্রিয়ঙ্কা। বলেন, ‘‘মোদীজি বলেছেন উনি তপস্যা করেছেন। তপস্যা তো অহঙ্কার, রাগ, ঘৃণার অবসান ঘটায়। এই সরকারের অহঙ্কার এতটাই যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে না। মঞ্চে বসে বড় বড় কথা বলে।’’ প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীর গরিব, কৃষকদের সমস্যার খোঁজও নেন না মোদী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তপস্বী প্রধানমন্ত্রী নিজের কেন্দ্রের গরির, কৃষকদের কাছে গিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্যও জানতে চাননি আপনাদের সমস্যাগুলি কী! আপনাদের সমস্যা দূর করতে কোন তপস্যা করতে হবে।’’ প্রিয়ঙ্কা অভিযোগ করেছেন, প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন এবং ক্ষমতাসীন হয়ে শুধু প্রচারই করে গিয়েছেন। কৃষকদের সমস্যায় কর্ণপাতও করেননি। তিনি বলেন, ‘‘তপস্বী প্রধানমন্ত্রী ১২ হাজার কৃষকের আত্মহত্যা দেখেও চুপ থাকেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে কৃষকেরা যখন মিছিল করে দিল্লি গেলেন, তখন দেখা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঁচ মিনিট সময় হল না। অথচ আমেরিকা, চিন এবং জাপানের প্রেসিডেন্ট, ইউরোপের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে তাঁর দেখা করার সময় আছে।’’ প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং জিএসটি চালু দেশের সর্বনাশ করেছে।