প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।
সাজানো থালি। মায়ের কথায় আবেগে ভেসে যাওয়া। এবং সর্বোপরি, কাশ্মীরি হিন্দুদের নববর্ষের শুভেচ্ছা। সব ঠিক ছিল। শুধু টুইটের প্রথম শব্দটা গোল পাকিয়ে দিল! যার জেরে ট্রোলড হতে হল সম্প্রতি টুইটারে যোগ দেওয়া প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে।
তবু সেই টুইট মুছলেন না পূর্ব উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। কাল রাত ৯টা নাগাদ প্রিয়ঙ্কা তাঁর টুইটের প্রথম লাইনেই লিখেছিলেন, ‘‘নওরোজ়ের শুভেচ্ছা জানাই সব কাশ্মীরি বোন ও ভাইদের।’’ তার পরের লাইনগুলি ছিল— ‘‘মা বলেছিল, কিন্তু থালি সাজিয়ে রাখার সময় পাইনি। রোড-শো করে বাড়ি ফিরে দেখলাম, মা নিজেই থালি সাজিয়ে রেখেছে ডাইনিং টেবিলে। মায়েরা এমনই মিষ্টি হয়, তাই না!’’ এর আগে প্রিয়ঙ্কা লিখেছিলেন, ‘‘দাদা আমার সত্যিকারের বন্ধু।’’ এ দিন বললেন মায়ের কথা। কিন্তু সবটাই যেন চাপা পড়ে গেল ‘নওরোজ়’ বিভ্রাটে! প্রিয়ঙ্কা টুইট পোস্ট করতেই হইচই জুড়ে দিলেন নেটিজ়েনের একাংশ। কেউ বললেন, ‘‘নওরোজ় তো ইরানি পার্সিদের নববর্ষ। আজ ‘নভরে’— কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নববর্ষ!’’ কেউ আবার বললেন, ‘‘লোকদেখানো আদিখ্যেতার এমনই দুর্দশা হয়!’’ মার্চে পেরিয়েছে নওরোজ়। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা যে থালি সাজানোর কথা লিখেছেন, সেটা কাশ্মীরি ‘নভরে’-রই অঙ্গ। অনেকে তাই একে নেহাত বানান ভুলই বললেন। তবু এতে যে অনেক কিছুই চাপা পড়ে গেল— তা মানছেন তাঁর দলেরই অনেকে।
যেমন— ‘বোন ও ভাইয়েরা’! গুজরাতে নিজের প্রথম জনসভায় এ ভাবেই ভাষণের শুরুটা করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। ছেলেদের আগে মেয়েদের কথা বলে তাঁর এই ব্যতিক্রমী সম্বোধনের প্রশংসা করে সে বার টুইট করেছিলেন কংগ্রেসের মহিলা শাখার প্রধান সুস্মিতা দেব। জবাবে একটা স্মাইলি দিয়ে প্রিয়ঙ্কা লিখেছিলেন— ‘‘আমি তো ভেবেছিলাম ব্যাপারটা কেউ খেয়ালই করেনি!’’ ‘নওরোজ়’ টুইটের শব্দবিভ্রাটে কিন্তু সেটাই হল।
অনেকে মুগ্ধ। তবে মাকে নিয়ে প্রিয়ঙ্কার আবেগমথিত হয়ে পড়ার ছবি এড়িয়েও গেলেন অনেকে। উত্তরপ্রদেশে গঙ্গাপথে প্রচার করতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা বারবার ঠাকুরমা ইন্দিরা গাঁধীর প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন। ইন্দিরার জন্মস্থানে গিয়ে রাত্রিবাসও করেছিলেন নাতনি প্রিয়ঙ্কা। ইন্দিরার ছায়া যে প্রিয়ঙ্কায়— সেটা বুঝিয়ে দেওয়া কংগ্রেসেরও কৌশল। এই নওরোজ় টুইট প্রসঙ্গেও এখন অনেকে বলছেন, ভোটে কংগ্রেসকে চাঙ্গা রাখতে প্রিয়ঙ্কা নিজেই পারিবারিক আবেগকে অস্ত্র করছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অনেকে আবার বলছেন, প্রিয়ঙ্কার বাবার দাদু জওহরলাল নেহরু কাশ্মীরি হিন্দু। আর প্রিয়ঙ্কার ঠাকুরদা ফিরোজ গাঁধী পার্সি। এর পরেও কী ভাবে নওরোজ়-নভরে গুলোলেন প্রিয়ঙ্কা!