এ বার ডোভালেও ‘জি’ বসালেন রাহুল, টক্কর দেশভক্তির

গত কাল রাহুল গাঁধীর মুখ থেকে মাসুদ আজহারের সঙ্গে ‘জি’ শুনেই তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়েছিল বিজেপি। ভোটের মুখে দেশভক্তির আবর্তেই প্রচারের কৌশল বেধে রাখতে মরিয়া তারা। রাহুল গাঁধীরাও এই ‘ফাঁদ’ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৭
Share:

ফের মাসুদ আজহারের কথা তুললেন রাহুল গাঁধী। ফের বললেন, যে মাসুদ আজহার পুলওয়ামায় বোমা ফেলেছে, অজিত ডোভালই তাকে ছেড়ে এসেছেন। তবে এ বারে আজহারকে আর ‘জি’ বললেন না। বরং ডোভালে ‘জি’ বসালেন।

Advertisement

গত কাল রাহুল গাঁধীর মুখ থেকে মাসুদ আজহারের সঙ্গে ‘জি’ শুনেই তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়েছিল বিজেপি। ভোটের মুখে দেশভক্তির আবর্তেই প্রচারের কৌশল বেধে রাখতে মরিয়া তারা। রাহুল গাঁধীরাও এই ‘ফাঁদ’ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন। কিন্তু একই সঙ্গে জানেন, নরেন্দ্র মোদী ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তাই দেশভক্তির লড়াইয়ে যেমন কংগ্রেস এগিয়ে থাকতে চাইছে, তেমনই মোদীর জাতীয়তাবাদের তাসেও ভাগ বসাতে চাইছে। সে কারণে ভবিষ্যতে সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের কথাও ইস্তাহারে রাখতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা।

ভোটের মুখে আজ মোদী-রাজ্য গুজরাতেই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক করেন রাহুল। প্রথমেই সকলকে নিয়ে যান গাঁধীর সাবরমতী আশ্রমে। তার পর বৈঠক হয় অম্বেডকর স্মারক ভবনে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘যে আইকনদের মোদী কেড়ে নিতে চাইছেন, সেই গাঁধী-পটেল-অম্বেডকরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনাই রাহুলের লক্ষ্য। পরে টুইট করেও রাহুল নিজেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁর লক্ষ্য, ‘‘ওয়ার্কিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, লড়াইটা বিজেপি আর সঙ্ঘের ঘৃণা ও হিংসার আদর্শ এবং ফ্যাসিবাদী ও বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে। এই শক্তিকে পরাস্ত করতে কোনও আত্মত্যাগই বেশি নয়, কোনও চেষ্টা নগণ্যও নয়। এ লড়াই জিতবই।’’

Advertisement

ওই বৈঠকে ইস্তাহার নিয়েও আলোচনা হয়। প্রিয়ঙ্কা বঢরা পরামর্শ দেন, রাহুলের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ‘নিশ্চিত ন্যূনতম আয়’ প্রকল্পের নাম হোক ‘ন্যায়’। রাহুলও পরে বলেন, “আমাদের ইস্তাহার অনেক নিষ্ঠার সঙ্গে তৈরি হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে নতুন জিএসটিরও সংশোধিত রূপ আসবে।”

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আরও পড়ুন: মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ালেন মমতা, তালিকায় রয়েছে চার নতুন মুখ

বৈঠকে রাহুল-সনিয়ার পাশাপাশি অনেক নেতাই দেশভক্তি নিয়ে মোদীর রাজনীতির সমালোচনা করেন। যে কারণে ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবেও বলা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে জাতীয় নিরাপত্তাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছেন, কংগ্রেস তাতে হতাশ। নিরাপত্তার প্রশ্নে কংগ্রেস পাশে আছে সরকারের। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী নিজের বিশাল ব্যর্থতা, ভুয়ো প্রতিশ্রুতি আর নিরন্তর মিথ্যাচার ঢাকতে চাইছেন।’’ বিজেপিকে হারাতে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছে ওয়ার্কিং কমিটি।

কিন্তু পুলওয়ামা ও সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর খোদ কংগ্রেসেরই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, বিজেপির আসন ৪০টির মতো বাড়তে পারে। যে কারণে বিরোধীরা যতই পুরনো প্রসঙ্গে ফিরে যাক, মোদী ফিরবেন না। তাই কংগ্রেসও ইস্তাহারে সন্ত্রাস মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিতে চান। দলের এক নেতার মতে, ২৬/১১-র পর মনমোহন সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ ছিল। মোদী পাকিস্তানে ঢুকে সেনা অভিযানের অনুমতি দিয়ে সেই কঠোরতা দেখিয়েছেন। কংগ্রেসকেও এই পথ ধরতে হবে। যদিও রাহুলের সুর ধরে কংগ্রেস আজও প্রচার করে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় এই ডোভালই কী ভাবে মাসুদকে কন্দহরে ছেড়ে দিয়ে এসেছিলেন। সে সময় এটিকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ বলেছিলেন। কিন্তু অরুণ জেটলি আজ বলেন, ডোভাল সেই সময় গোয়েন্দা সংস্থার কর্তা ছিলেন। গোয়েন্দারা সবসময় ‘মুখহীন’ হন। তাঁদের এ ভাবে প্রকাশ্যে এনে সমালোচনা করা সমীচীন নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন