প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধে’ সেই জওয়ান

ফোনে শান্ত গলায় তেজ বাহাদুর জানালেন, এ বারের ভোটে তাঁর লড়াই মূলত দুর্নীতির বিরুদ্ধে।

Advertisement

চৈতালি বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০২:১৪
Share:

তেজ বাহাদুর যাদব। —ফাইল চিত্র।

সালটা ২০১৭। তখন তিনি বিএসএফে, পোস্টিং জম্মু-কাশ্মীরে। সেখানে সরকার যে তাঁদের নিম্নমানের খাবার দেয়, তার একটা ভিডিয়ো পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। যার জেরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্র। আর তার পরেই বরাখাস্ত করা হয় তাঁকে। এ বার সেই ‘বিদ্রোহী জওয়ান’ তেজ বাহাদুর যাদবই ভোটে দাঁড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। নির্দল প্রার্থী হয়েই আসন্ন লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই প্রাক্তন আধা সামরিক জওয়ান।

Advertisement

কিন্তু কেন? ফোনে শান্ত গলায় তেজ বাহাদুর জানালেন, এ বারের ভোটে তাঁর লড়াই মূলত দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষের নজর সে দিকে ঘোরাতে চান তিনি। দেশবাসীকে এই লড়াইয়ে শামিল হওয়ারও ডাক দিলেন তেজবাহাদুর।

তাঁর কথায়, ‘‘মোদীজির মনোভাব অনেকটা যেন— ‘না নিজে খাব, না অন্যকে খেতে দেব’। তিনি আগের ভোটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছিলেন। আর আমি যখন খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেই কাজটা করলাম, উল্টে আমাকেই বরখাস্ত করা হল! তা-ও কিনা কর্তব্যে গাফিলতির মিথ্যা অভিযোগে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রাক্তন এই জওয়ানের বাড়ি হরিয়ানার রেওয়ারিতে। সেখান থেকে ভোটে না লড়ে মোদীর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত তিনি যথেষ্ট ভেবেচিন্তেই নিয়েছেন বলে দাবি তেজ বাহাদুরের। এমনকি জানালেন, অন্য দল থেকে তাঁকে টিকিট দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গিয়েছেন।

তেজ জানান, চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরে এখন কোনও মতে চাষের কাজ করে সংসার চলে। তাঁর ক্ষোভ, দেশের চাষিরা যেখানে না-খেতে পেয়ে মরছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রী সেনা-জওয়ানদের নিয়ে রাজনীতি করে বেড়াচ্ছেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পুলওয়ামার পরে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া হোক কিংবা অভিনন্দন বর্তমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা—সবটাই তো করেছে সেনা। প্রধানমন্ত্রী কেন কৃতিত্ব দাবি করছেন?’’

বারাণসী থেকে মোদীর বিরুদ্ধে ভাল অঙ্কের ভোট পাওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। যদিও জানালেন, হার-জিত নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না। তিনি বলেন, ‘‘দেশের গরিব মানুষ থেকে, চাষি, জওয়ান— সকলেই বঞ্চিত। মানুষকে এর বিরুদ্ধে সচেতন করার জন্যই আমার ভোটে দাঁড়ানো।’’

শীঘ্রই বারাণসীর প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে প্রচারে নামবেন তেজ। জানিয়েছেন, সেখানে যেমন গরিবের খেতে না-পাওয়ার বিষয়টি থাকবে, বিএসএফ বা সেনায় যোগ দেওয়া জওয়ানদের পরিবারের অসহায়তার বিষয়টিও সামনে আনবেন তিনি। তেজের আশা, দেশের জওয়ানেরা মোদী নন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর লড়াইয়ের পাশেই থাকবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন