টুইট-যুদ্ধে রাহুল, কেজরী

কংগ্রেস সঙ্গে জোট নিয়ে গত কালই কেজরীবাল বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

দিল্লিতে জোট-জট নিয়ে বেনজির টুইট-যুদ্ধ শুরু হল রাহুল গাঁধী-অরবিন্দ কেজরীবালের মধ্যে।

Advertisement

কংগ্রেস সঙ্গে জোট নিয়ে গত কালই কেজরীবাল বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হবে। আর আজ সন্ধ্যায় আচমকাই রাহুল গাঁধী টুইট করলেন, ‘‘দিল্লিতে কংগ্রেস ও আপের জোট মানে বিজেপিকে উৎখাত করা। সেটি সুনিশ্চিত করার জন্য কংগ্রেস দিল্লিতে চারটি আসন আপকে ছেড়ে দিতেও রাজি। কিন্তু মিস্টার কেজরীবাল আবার ‘ইউ-টার্ন’ করলেন। আমাদের দরজা এখনও খোলা, কিন্তু সময় চলে যাচ্ছে।’’ সঙ্গে রাহুল হ্যাশট্যাগ জুড়লেন ‘অব আপ কি বারি’।

মিনিটখানেকের মধ্যেই টুইটে জবাব দিলেন কেজরীবাল। পাল্টা প্রশ্ন করলেন রাহুলকে: ‘‘কীসের ইউ-টার্ন? এখনও তো আলোচনা চলছে। কিন্তু আপনার টুইট বলছে, জোট করা আপনার ইচ্ছা নয়, শুধুই লোকদেখানো। দেখে দুঃখ লাগছে, আপনি বিবৃতি জারি করছেন।’’ এখানেই থামেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। রাহুলকে পাল্টা তোপ দেগেই বলেছেন, ‘‘দুর্ভাগ্য। আপনি উত্তরপ্রদেশ আর অন্য রাজ্যে মোদী-বিরোধী ভোট কেটে মোদীজিকেই সাহায্য করছেন।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কেজরীবাল নিজে লড়ে ক্ষান্ত দিয়েছেন, এমন নয়। এত দিন কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার জন্য নিজের দলের নেতা সঞ্জয় সিংহকে নিয়োগ করেছিলেন। কংগ্রেসের দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পি সি চাকোর সঙ্গে সমঝোতা করতে। সেই সঞ্জয় সিংহও রাহুলের টুইটের জবাব দিয়ে বলেন, ‘‘পঞ্জাবে আপের ৪ সাংসদ, ২০ জন বিধায়ক। অথচ কংগ্রেস একটিও আসন দিতে চায় না। হরিয়ানায় কংগ্রেসের একজন সাংসদও নেই। সেখানেও একটিও আসন দিতে চায় না। দিল্লিতে কংগ্রেসের এক জনও সাংসদ বা বিধায়ক নেই। কিন্তু সেখানে আমাদের থেকে তিনটি আসন চান! এভাবে হয় জোট? অন্য রাজ্যে বিজেপিকে কেন রুখতে চান না আপনি?’’ এর পর আসরে নামলেন পি সি চাকো। বললেন, ‘‘দিল্লির সীমানার বাইরেও আপ ১৮টি আসনে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রথমে আমাদের দিল্লিতে জোটের ব্যাপারে আসা উচিত। রাহুল গাঁধী বলেছেন, দরজা খোলা। একটি রাজ্যের সিদ্ধান্ত অন্য রাজ্যে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। প্রতিটি রাজ্যের পরিস্থিতি আলাদা।’’

দুই দলের শীর্ষ নেতার মধ্যে এই বেনজির টুইট-যুদ্ধের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এটি কি পাকাপাকি জোট না হওয়ারই সঙ্কেত? তা না হলে প্রকাশ্যে কেন দুই দলের নেতারা একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানো শুরু করবেন? না কি তলে তলে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার দিকে গড়াতে দুই নেতাই প্রকাশ্যে টুইট করে স্নায়ুযুদ্ধে এগিয়ে থাকার চাল দিলেন? চন্দ্রবাবু নায়ডু থেকে শরদ পওয়ারের মতো নেতারা দিল্লিতে কংগ্রেস ও আপের সমঝোতার পক্ষে। জোট যদি ভেস্তে যায়, সে কারণেই কি রাহুল আগেভাগে দায় ঝেড়ে বাকিদেরও শুনিয়ে রাখলেন?

কিন্তু রাহুলের জবাবে কেজরীবাল ও তাঁর সেনাপতিরা যা বললেন, সেটি উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা নেতারাও বলছেন। কেজরীবালের মতো তাঁরাও বলছেন, নিজের দলের শক্তি বৃদ্ধির নামে আসলে রাহুল নিজের ‘অহঙ্কার’ প্রকাশ করছেন। বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে সুবিধা হবে মোদীরই। তা না হলে সপা-বসপা জোটে বিজেপিকে বিপুল খেসারত দিতে হচ্ছে। প্রথম দফার ভোটেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

যদিও কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, দিল্লিতে জোট করার ব্যাপারে রাহুলের বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কিন্তু কেজরীবাল চান, বাকি রাজ্যেও সমঝোতা করতে। অথচ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ আগেই সটান এ প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। এর পর আপ দিল্লি, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় নিয়ে মোট ১৮টি আসনে জোটের প্রস্তাবে অনড় থেকেছে। হরিয়ানায় আপ দুষ্মন্ত চৌটালার দলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই সমঝোতা করেছে। সেখানেও কংগ্রেসকে তিনটি আসন ছাড়তে বলছে। কিন্তু সে রাজ্যে দশটির মধ্যে তিনটি ছাড়লে কংগ্রেসের কী থাকে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন