সি-ভিজিল অ্যাপে অভিযোগের নিরিখে দেশে চতুর্থ স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। এই অভিযোগের ক্ষেত্রে দেশে প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে কেরল, মধ্যপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।
সকলের কাছ থেকে সরাসরি অভিযোগ পেতে সি-ভিজিলকে হাতিয়ার করেছিল নির্বাচন কমিশন। ভোট ঘোষণা হতেই বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়ছে সেখানে। কমিশন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কেরলে সি-ভিজিলে ১১, ৩৫৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে। মধ্যপ্রদেশ ৪৯৯৫টি। অন্ধ্রপ্রদেশে ৪৫৩৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। বঙ্গে সেই সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৩০৭৬। পড়শি ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। সেখানে যথাক্রমে ২৯৩, ৬০১ এবং ৬৫৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
এ রাজ্যে অন্য তিনটি রাজ্যের তুলনায় অভিযোগ কম কেন? কমিশনের একাংশের মতে, বঙ্গে সি-ভিজিলে অভিযোগের বেশির ভাগটাই নির্বাচনী বিধিভঙ্গ সংক্রান্ত অর্থাৎ দেওয়াল লিখন, বৈদ্যুতিক বাতিস্তম্ভ বা গাছে রাজনৈতিক দলের পতাকা বা পোস্টারের ছবিও রয়েছে। এমনকি, পারিবারিক গোলমালও সেখানে ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু অন্য রাজ্যের ক্ষেত্রে খরচ সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগও জমা পড়েছে। বঙ্গে ভোট পর্বে এখনও পর্যন্ত আর্থিক বিষয়ে অভিযোগ কার্যত নেই।
কমিশনের অন্য একটি অংশের মতে, ‘সি-ভিজিল’-এ অভিযোগ পাঠানোর ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই অভিযোগের
তারতম্য নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে তুলনা টানা অর্থহীন হবে। তবে সি-ভিজিল অ্যাপে অভিযোগের নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যথেষ্টই সক্রিয় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) দফতর।
রাজ্য প্রশাসনের একাংশের দাবি, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এবারের লোকসভা ভোটে অভিযোগের সংখ্যা নিতান্তই কম। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের উপর শাসকদলের আক্রমণ এবং সেক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা থাকা—এই দুটি বিষয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে চলতি লোকসভা ভোটে পুলিশের সক্রিয়তার দাবি করছেন প্রশাসনের কর্তারা। অন্য একটি অংশের দাবি, পুলিশের উপরে আস্থা হারিয়ে বঙ্গবাসী সরাসরি কমিশনে অভিযোগ করছেন। তাঁরা সি-ভিজিল-এর পাশাপাশি জাতীয় অভিযোগ গ্রহণ পরিষেবা (ন্যাশনাল গ্রিভাসেন্স সার্ভিস বা এনজিএস) পোর্টালে অভিযোগ করছেন। সি-ভিজিল অ্যাপে ৩০৭৬টির পাশাপাশি এনজিএস পোর্টালে নাগরিক মারফত এখনও পর্যন্ত ১৪২৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে। পাশাপাশি, এনজিএস পোর্টালের মাধ্যমে কমিশন থেকে বঙ্গে প্রেরিত অভিযোগের সংখ্যা ১২৭৩টি। এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করে ওই অংশ বলছে, কমিশনকে সরাসরি অভিযোগ হলে প্রশাসনের কাছে সেই সংখ্যা কম হতেই পারে।