জাতীয় সড়কের গর্তে এ ভাবেই উল্টেছে মালবোঝাই লরি। রবিবার করিমগঞ্জে শীর্ষেন্দু শী-র তোলা ছবি।
ভোট মিটতেই চেনা ছন্দে ফিরল করিমগঞ্জ। বেহাল জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল মালবোঝাই লরি। তার জেরে রাস্তা অবরোধ করলেন এলাকাবাসী। মামলা রুজু করা হল পূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে।
গত কালও জেলার জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল যাত্রীবোঝাই একটি গাড়ি। এ দিন উল্টে যায় লরি। বরাতজোরে প্রাণে বাঁচেন চালক, খালাসি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরি থেকে তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয় জনতাই।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বদরপুর থেকে চুড়াইবাড়ি পর্যন্ত ৬ ও ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক জরাজীর্ণ। বদরপুরঘাটে রাস্তা মেরামতির কাজ কিছুটা হলেও, বিশাল আকারের কয়েকটি গর্ত এখনও রয়েছে। কয়েক পশলা বৃষ্টিতে জল, কাদায় ভরে যায় গোটা রাস্তা। গর্ত কোথায় রয়েছে তা বোঝা দায়। তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। গত কাল ওই সড়কে একটি গাড়ি উল্টে আহত হন ১৫-২০ জন। পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে ভাঙ্গা এলাকায় একটি মালবাহী লরি উল্টে যায়। চালক-খালাসি লরির মধ্যেই আটকে পড়েছিলেন। এলাকাবাসী তাঁদের উদ্ধার করেন। এর পরই শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। বদরপুর থানার ওসি ঈশ্বর সিংহ তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও লাভ হয়নি। এলাকাবাসী জানিয়ে দেন, অনেক বার আন্দোলন করা হয়েছে। প্রশাসন-পুলিশের অনুরোধে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে অনেক দিন থেকেই ক্ষোভ জমেছিল বদরপুর, ভাঙ্গা, একলাবাড়ি, মকইভাঙ্গা এলাকায়। এ দিন এলাকার মানুষ এ নিয়ে জেলাশাসক মনোজকুমার ডেকার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। পূর্ত বিভাগের এন এইচ ডিভিশনের করিমগঞ্জের ইঞ্জিনিয়ার মোহিত দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন জেলাশাসক। স্থানীয় সূত্রে খবর, মোহিতবাবুকে ফোন করা হলেও, তিনি তা ধরেননি। এর পরই ভাঙ্গা এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য কমরুল ইসলাম কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে মোহিতবাবুর বিরুদ্ধে বদরপুর থানায় মামলা রুজু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাতীয় সড়কে মেরামতির কাজ শুরুর জন্য সরকারের তরফে প্রাথমিক ভাবে ৪৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিকিভাগও কাজ করা হয়নি। ওই টাকা লোপাটের চক্রান্ত চলছে। জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্য সমস্যা পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা।
অন্য দিকে, পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় পাথারকান্দিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন এলাকাবাসী। বুধবার রাতে করিমগঞ্জে প্রবল বৃষ্টি-সহ ঝড়ো হাওয়ায় কয়েকটি গাছ উপ্ড়ে গিয়েছিল। তার জেরে ছিঁড়ে যায় বিদ্যুৎবাহী কিছু তার। এর পরই নিলামবাজার থেকে পাথারকান্দি পর্যন্ত দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ দিন পরও সে সব এলাকায় লোডশেডিং চলছে। তার প্রতিবাদে এ দিন পাথারকান্দিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পাথারকান্দির সার্কেল অফিসার জেসিকা লালসিম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সন্ধের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা কিছুটা স্বাভাবিক করার আশ্বাসে ঘণ্টাচারেক পর অবরোধ ওঠে।