প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুলকেই চান স্ট্যালিন

উপলক্ষ ছিল প্রয়াত ডিএমকে নেতা এম করুণানিধির মূর্তি উদ্বোধন। সনিয়া গাঁধীর হাত দিয়েই সেই মূর্তির উদ্বোধন করালেন করুণা-পুত্র এম কে স্ট্যালিন।

Advertisement

 সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৩
Share:

চেন্নাইয়ের সভায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। রবিবার। পিটিআই

উপলক্ষ ছিল প্রয়াত ডিএমকে নেতা এম করুণানিধির মূর্তি উদ্বোধন। সনিয়া গাঁধীর হাত দিয়েই সেই মূর্তির উদ্বোধন করালেন করুণা-পুত্র এম কে স্ট্যালিন। কিন্তু সঙ্গে যে কাজটি করলেন, তা নরেন্দ্র মোদীর রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। লোকসভা ভোটে বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করে দিলেন তিনি।

Advertisement

এর আগে চন্দ্রবাবু নায়ডু বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে আকারে-ইঙ্গিতে রাহুলের কথা বলেছেন। কিন্তু এই প্রথম সরাসরি ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুলের নাম তুলে ধরল ইউপিএ-র কোনও শরিক। ১৯৮০ সালে করুণানিধি স্থিতিশীল সরকার চেয়ে ‘পণ্ডিত নেহরুর কন্যা’কে স্বাগত জানানোর কথা বলেছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি একই ভাবে স্বাগত জানান ‘ইন্দিরার পুত্রবধূ’ সনিয়া গাঁধীকে। সেই কথা মনে করিয়ে স্ট্যালিন আজ বলেন, ‘‘২০১৮ সালে কলাইনারের পুত্র হিসেবে আমি রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করছি। আমরা দিল্লিতে নতুন প্রধানমন্ত্রী আনব। গড়ব নতুন ভারত।’’ চেন্নাইয়ে ডিএমকে-র সদর দফতরে করুণানিধির মূর্তি উদ্বোধনের পরে প্রকাশ্য সভা-মঞ্চে স্ট্যালিনের সঙ্গে সনিয়া-

রাহুল ছাড়াও ছিলেন চন্দ্রবাবু এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সেখানেই স্ট্যালিন বলেন, ‘‘ফাসিস্ত-নাৎসি মোদী সরকারকে পরাজিত করার ক্ষমতা আছে রাহুলের। মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের অনুরোধ, আসুন আমরা রাহুলের হাত শক্ত করি। দেশকে বাঁচাই।’’

Advertisement

স্ট্যালিনের এই প্রস্তাবে অবশ্য বিরোধী শিবিরে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ওই সভাতেই উপস্থিত সিপিআই নেতা ডি রাজা পরে বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে এখনও আলোচনা বাকি।’’ যা দেখে এক বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘স্ট্যালিন রাহুলের নাম প্রস্তাবের পরেই মায়াবতী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার থেকে অখিলেশ যাদব বেঁকে বসেছেন। এ কেমন বিরোধী ঐক্য?’’ এ কথা ঠিক যে, বিরোধী-বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা হবে না। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের মতে, তিন রাজ্যে বিজেপিকে হারিয়ে রাহুলই আদতে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন। যে কারণে গোড়ায় জোট না-করেও মায়া-অখিলেশ বিধানসভা ভোটের ফল দেখে সমর্থন দিয়েছেন কংগ্রেসকে।

এ দিন চেন্নাইয়ে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল না রাহুলের। শেষ মুহূর্তে বক্তার তালিকায় শামিল করা হয় তাঁর নাম। রাহুল বলেন, ‘‘ভারত নামের ভাবনাটাকে যে ভাবে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে, তা আমরা মেনে নেব না। বিজেপিকে হারাতে ভারতের সব কণ্ঠস্বর এক হবে।’’

বস্তুত, ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোটের ছবি তুলে ধরাটাই এখন রাহুলের কর্মসূচি। কাল সকালে রাজস্থানের নয়া মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটের শপথ উপলক্ষে জয়পুরে যাবেন তিনি। তার পরে যাবেন ভোপালে, কমল নাথের শপথে। সেখান থেকেই রওনা হবেন রায়পুরে, মুখ্যমন্ত্রী পদে ভূপেশ বঘেলের শপথ অনুষ্ঠানে। ওই তিনটি অনুষ্ঠানেই থাকবেন চন্দ্রবাবু। তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে মধ্যপ্রদেশে যাচ্ছেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। রাজস্থানে রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হককে পাঠাচ্ছেন মমতা। তবে মায়াবতীর যাওয়া অনিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে স্ট্যালিনের ঘোষণার পরে বিরোধী শিবিরের ছবি কী দাঁড়ায়, তা দেখতে মুখিয়ে রয়েছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন