অরুণ গাওলির নাগাল পেতে এক সময়ে কাল ঘাম ছুটে যেত মুম্বই পুলিশের। ফাইল চিত্র।
‘ড্যাডি’র জীবনে মুন্নাভাইয়ের ছোঁয়া।
গোটা মুম্বই তাকে চেনে ‘ড্যাডি’ নামেই। একটা গোটা ছবিও তৈরি হয়ে গিয়েছে তার জীবন নিয়ে। সেই ‘ড্যাডি’ই জেলের অন্দরে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে গিয়েছেন। ঠিক যে ভাবে গাঁধীতত্ত্ব আত্মস্থ করে ফেলেছিলেন মুন্নাভাই।
শিবসেনা নেতা কমলাকর জামসান্দেকরকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল ‘ড্যাডি’ অর্থাৎ মাফিয়া ডন অরুণ গুলাব গাওলির। নাগপুর সেন্ট্রাল জেলেই এই মুহূর্তে দিন গুজরান হচ্ছে গাউলির। কিন্তু কারা-জীবনেই যা খেল দেখালেন অরুণ তাতে আপাতত প্রায় সকলেরই চক্ষু চড়কগাছ।
২০১৭ সালে গাঁধী সচেতনতা পরীক্ষা হয় নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে। আর সেই পরীক্ষায় শুধু যে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাই নয়, সর্বোচ্চ নম্বরও পেয়ে গিয়েছেন গাউলি। নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে ১ অক্টোবর এই পরীক্ষাটি হয়েছিল। ফল প্রকাশের কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতেই। কিন্তু নিরাপত্তার সমস্যার কারণে ফলাফল প্রকাশ হতে প্রায় সাত মাস দেরি হয়।
আরও পড়ুন: ‘মুখ বন্ধ করুন, নয়তো আপনার মুখ বন্ধ করে দেব’, এ বার হুমকি জেএনইউ-এর নেত্রীকে
আরও পড়ুন: এ বার ‘গোরক্ষক’ আমরাই, বলল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট
সহযোগ ট্রাস্টের এক সদস্য রবীন্দ্র ভুসারি বলছিলেন ‘‘বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধা পেলেও ৮০ নম্বরের মধ্যে গাউলির প্রাপ্ত নম্বর ৭৪। আমরা সকলেই খুব খুশি যে, জেল জীবনে গাউলি গাঁধীর আদর্শ পালন করছেন।’’
মোট ১৬০ জন বন্দি পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ১২ জন মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত। আর বাকি প্রায় সকলেরই যাবজ্জীবন কারদণ্ড। তবে কেউ কেউ এখনও বিচারাধীন। ‘‘গাউলি কিন্তু প্রথম থেকে পরীক্ষায় বসার আবেদনপত্র জমা দেননি। তবে বম্বে সর্বোদয়া মণ্ডলের স্টাডি মেটিরিয়াল দেখার পরেই ওর মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ জন্মায়।’’ বলেন রবীন্দ্র ভুসারি।
বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধা পেলেও ৮০ নম্বরের মধ্যে গাউলির প্রাপ্ত নম্বর ৭৪। ফাইল চিত্র।
গত শনিবার সহযোগ ট্রাস্টের তরফে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিজয়ীদের খাদির কাপড়, মহাত্মা গাঁধীর আদর্শ ও নীতি সংক্রান্ত বই উপহার দেওয়া হয়। পাশাপাশি পরীক্ষা সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করার জন্য পেন এবং ডায়রিও দেওয়া হয়।
বম্বে সর্বোদয়া মণ্ডলের প্রধান টিআরকে সোমানিয়া বলছিলেন, বিগত ১১ বছর ধরে মহারাষ্ট্রের নানা প্রান্তের কারাগারে এই ধরনের পরীক্ষার আয়োজন করে আসছে বম্বে সর্বোদয়া মণ্ডলের সহযোগ ট্রাস্ট। আর রবীন্দ্র ভুসারি বলছিলেন ‘‘বন্দিদের আমরা এই ভাবেই উৎসাহিত করতে চাই। সরকারের কাছে অনুরোধ, প্রত্যেক বন্দিকে জেলজীবন থেকে অন্ততপক্ষে পাঁচ দিন যেন মুক্ত রাখা যায় এই ধরনের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ।’’