সাংসদদের ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ পথেই কি হাঁটছে সরকার?

আসি যাই মাইনে পাই! সংসদের এই রীতির বিরুদ্ধে এ বার সওয়াল করলেন খোদ মোদী সরকারের এক মন্ত্রী। সোমবার উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে অসমারিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী মহেশ শর্মা বললেন, ‘‘সাংসদদের জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ চালু হওয়া উচিত।’’

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ১৮:১৯
Share:

এখন এটাই সংসদের নিয়মিত ছবি।— ফাইল চিত্র।

আসি যাই মাইনে পাই! সংসদের এই রীতির বিরুদ্ধে এ বার সওয়াল করলেন খোদ মোদী সরকারের এক মন্ত্রী। সোমবার উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে অসমারিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী মহেশ শর্মা বললেন, ‘‘সাংসদদের জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ চালু হওয়া উচিত।’’ তবে কি সরকার সেই পথেই হাঁটচে চলেছে?

Advertisement

একই কথা শোনা গিয়েছে বিজেপি-র আর এক সাংসদ পুনম মহাজনের কণ্ঠেও। বিজেপি-র প্রয়াত দাপুটে নেতা প্রমোদ মহাজনের মেয়ে পুনম পেশায় আইনজীবী। তবে এই প্রশ্নটি তিনি সাধারণের কাছে ঠেলে দিয়েছেন মাত্র। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক উঠুক সেটাও চাইছেন তিনি। পদ নির্বিশেষে দেশের প্রত্যেক কর্মী যদি ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’-র আওতায় পড়েন, তবে সাংসদরা সেই নিয়মের বাইরে কেন? প্রশ্ন তুলেছেন পুনম। সেই প্রশ্নের পিছনে যুক্তিও খাড়া করেছেন তিনি। বলছেন, ‘‘আমি প্রশ্নটা তুলছি, কারণ এক জন আইনজীবী হিসেবে সব কিছু যুক্তিযুক্ত ভাবেই দেখতে শিখেছি। তাই, আমাদের দেওয়া মাইনেটাকেও মর্যাদা দিতে চাই।’’

পুনমের তোলা এই প্রশ্নে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, ‘আপনি আচারি ধর্ম পরকে শেখাও’। ক্ষমতায় আসার আগে দিনের পর দিন বিভিন্ন ইস্যুতে সংসদ অচল করে রেখেছে বিজেপি। তত্কালীন শাসক দলের কোনও আবেদন নিবেদনে কাজ হয়নি। কয়লা থেকে টুজি কেলেঙ্কারি— একের পর এক ঘটনায় বিজেপি সংসদ ভণ্ডুল করেছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। সেই বিজেপি এখন বেশ কয়েকটি ঘটনায় বিপাকে পড়ে উল্টো সুর গাইছে।

Advertisement

সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে না হতেই কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে প্রায় রোজই অচল হয়ে পড়ছে লোকসভা। রাজ্যসভাতেও প্রায় একই ছবি। এর মধ্যে ২৫ জন কংগ্রেস সাংসদকে সাসপেন্ড করায় কংগ্রেসের তরফে মঙ্গলবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা পাঁচ দিনের জন্য সংসদ বয়কট করছে। পাশে রয়েছে বিরোধীরাও। অথচ এই সাংসদরা প্রতি দিন নিয়ম করে মাইনে পাবেন। কানাকড়িও কাটা যাবে না। সংসদ সচল না অচল, তার উপরও কিছু নির্ভর করবে না। এ সব ঘটনা থেকেই পুনম প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি মসৃণ ভাবে সংসদ চলার কোনও উপায় নেই? বাদল অধিবেশনে এই অচলাবস্থা কাটানোর কি অন্য কোনও রাস্তা রয়েছে? উত্তরের সন্ধানে নেমে পুনম সাংসদদের জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ ব্যবস্থার পক্ষেই সওয়াল করেছেন।

বিরোধী শিবিরের একাংশের দাবি, আসলে যেন তেন প্রকারেণ বিজেপি সংসদ চালু রাখতে চাইছে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিন্তু, পুরনো কথা ভুলে গেলে তো এখন চলবে না! কাজেই যে পথ নিজে দেখিয়েছ এখন তার উল্টো পথে হাঁটার কথা ভাবা ঠিক নয় বলে বিরোধীদের মত। তাদের আরও পরামর্শ, রাস্তা তো খোলাই আছে। মন্ত্রীদের অপসারণ-সহ বাকি দাবিদাওয়াগুলো মেনে নিলেই তো সংসদ সচল হয়। সরকার সেটাই করে দেখাক।

সম্প্রতি তাঁদের মাইনে দ্বিগুন করার দাবি জানিয়েছেন সাংসদদের একাংশ। এই নিয়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। সরকার যদিও সেই দাবি মেনে নেয়নি। এর মধ্যে পুনমের ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’র প্রস্তাব কতটা বির্তকের জন্ম দেয় এখন সে দিকে তাকিয়েই আম আদমি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন