মালায়লম লেখক কমল চাভারা। ছবি: সংগৃহীত।
জাতীয় স্তোত্রকে ‘অসম্মান’ করায় দেশদ্রোহিতার অভিযোগে কেরলের এক লেখককে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে জাতীয় স্তোত্র নিয়ে অবমাননাকর লেখা পোস্ট করেন মালায়লম লেখক কমল সি চাভারা। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনে বিজেপি-র শাখা যুব মোর্চা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই কোঝিঝোড় থেকে চাভারকে আটক করে কোলামে নিয়ে যায় পুলিশ।
গত ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, হলে সিনেমা শুরুর আগে জাতীয় স্তোত্র বাজাতে হবে। উঠে দাঁড়াতে হবে সিনেমা হলে উপস্থিত সমস্ত দর্শককেও। কিন্তু না দাঁড়ালে কী সাজা হবে, তা স্থির করে দেয়নি শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ অমান্য করার ঘটনা সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় ঘটেছে। জাতীয় স্তোত্রের সময় উঠে না দাঁড়ানোর জন্য কিছু দর্শককে মারধর করে সিনেমা হল থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনাও সামনে আসে। কেরল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও এ রকম একটি ঘটনায় ১২ জনকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে পুলিশ।
মালায়লম লেখক সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেই ফেসবুকে জাতীয় স্তোত্র নিয়ে ‘অসম্মানজনক’ কথা লেখেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। বিজেপির যুব মোর্চা চাভারার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনে। পুলিশ জানিয়েছে, এই প্রথম নয় জাতীয় স্তোত্র নিয়ে নিজের বইতে আগেও অসম্মানজনক মন্তব্য লেখায় চাভারার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ উঠেছিল। কেন এ রকম করলেন তাঁকে সে বিষয়ে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোলামের পুলিশ সুপার সতীশ বিনো। চাভারাকে গ্রেফতারের করার পরই মানবাধিকার কর্মীরা আসরে নেমে পড়েন। ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে লেখকের আটকের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় তাঁরা।
আরও খবর: ‘পাকিস্তান নরক নয়’ বলায় কন্নড় অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা
ফেসবুক পোস্টে চাভারা মালায়ম ভাষায় লিখেছিলেন, যার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, “কেরলের একটি স্কুলের ৪৪ জন ছাত্রের নাম ৪৪টি শুকিয়ে যাওয়া নদীর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। ওই স্কুলের শিক্ষকরা কখনওই ছাত্রদের অনুরোধ শুনতেন না। এমনকী প্রস্রাব করতে যাওয়ার অনুমতি চাইলেও তা গ্রাহ্য করতেন না। প্রতি দিন বিকেল ৪টের সময় জাতীয়স্তোত্র গাওয়ার জন্য এই ছাত্রদের লাইনে দাঁড় করানো হত। এ ক্ষেত্রে আমি অবাধ্য ছাত্র হতেই পছন্দ করব, কেন না আমার কাছে ‘জন গণ’-র থেকে প্রস্রাব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”