নতুন সংরক্ষণ-ঘোষণার পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
নীতিগত বিরোধিতা না-করলেও কেন্দ্রের নতুন সংরক্ষণ-ঘোষণার পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে বেরনোর সময় সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘‘আমি নীতিগত ভাবে এই চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির বিরোধী নই। কিন্তু যে পদ্ধতিতে এটা করা হচ্ছে, এটা আইনসিদ্ধ হবে না বলে আমার বিশ্বাস। এটা পদ্ধতিগত ভাবে ত্রুটিপূর্ণ জেনেও যদি করা হয়, তা হলে তা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা। আসলে এটা নির্বাচনের চমক।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা, তিন মাস নয়, ১৫-২০ দিনের মধ্যেও নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি সমাজের দুর্বল অংশ চাকরি পায়, তা হলে আমি খুশি হব। কিন্তু সাংবিধানিক ভাবে সংরক্ষণ ৫০% ছাড়িয়ে যেতে পারে না। ওয়েবসাইট থেকে ক্যাবিনেটের যে নথি আমি দেখেছি, তাতে ওরা সংরক্ষণ ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০% করতে চাইছে। এটা করা যায় কি না, এটা আমার প্রথম প্রশ্ন।’’
একটি মামলার উদাহরণ টেনে কেন্দ্রের পদক্ষেপের আইনগত যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৯২ সালে ইন্দ্র সহানে বনাম ভারত সরকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সাম্যের ধারণা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, এমন সংরক্ষণের পদক্ষেপ করা যাবে না। সংবিধানের ১৫(৪) এবং ১৬(৪) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষণ ৫০% ছাড়িয়ে যাবে না— এই অবস্থানই নিয়েছিল আদালত। নাগরাজ মামলার রায়েও এই মূল বিষয়টির বদল করা হয়নি।
এই সব রায়ের উল্লেখ করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রথমে কেন্দ্রকে স্পষ্ট করতে হবে সাংবিধানিক ভাবে এবং আইনের দিক এটা সঠিক কি না এবং সম্ভব কি না। কারণ, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে না। এর পরে যদি কেউ আদালতে যায়, তা হলে এটার বাস্তবায়ন করা যাবে কি না। আমি যথাযথ বাস্তবায়ন চাই। আমরা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সুবিধার্থে যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারি না।’’