মিত্রশক্তি: লালুপ্রসাদের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-বিরোধী এই মঞ্চে আরও অনেকের সঙ্গে ছিলেন শরদ যাদবও। —নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ে ঠাসা ময়দানে হাজির ছিলেন জাতীয় স্তরের একাধিক শীর্ষ নেতা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ালেন তিনি— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার পটনার গাঁধী ময়দানে লালু প্রসাদের ডাকা ‘বিজেপি ভাগাও, দেশ বাঁচাও’ সমাবেশে কিছুটা দেরিতেই পৌঁছন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে তখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন লালু-তনয় তেজস্বী। মাঝপথেই কথা থামিয়ে মমতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন তিনি। সভায় গোলাপের তোড়া দিয়ে তৃণমূলনেত্রীকে স্বাগত জানান লালু-রাবড়ী দেবী। তার পর থেকে সভার মধ্যমণি হয়ে ছিলেন মমতাই। লালুর পাশের আসনে বসলেও মাঝেমধ্যেই উঠে গিয়ে কথা বলেছেন শরদ যাদব, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের সঙ্গে। হাত মেলান সিপিআই নেতা ডি রাজার সঙ্গেও। মমতাকে সামনে রেখেই আগামী দিনে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের ডাক দেন অখিলেশ। নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোটের সভা করার ব্যাপারে এ দিন অখিলেশের সঙ্গে মমতার প্রাথমিক কথাও হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
নোট বাতিল থেকে সিবিআই— বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘এই সরকার ফর দ্য এজেন্সি, অফ দ্য এজেন্সি, বাই দ্য এজেন্সি হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, লালুর মতোই তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা, সাংসদদেরও জেলে পাঠানোর চক্রান্ত হচ্ছে। মমতার কথায়, ‘‘আমরা ভয় পাওয়ার লোক নই। লড়াই করার লোক। দেখি কত জনকে জেলে ঢোকাতে পারো!’’ তবে এ দিন নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের নাম করেননি মমতা।
সভায় ‘রেকর্ডেড’ বার্তা পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। লিখিত বার্তা পাঠান বিদেশ সফররত রাহুলও। ছোট্ট, কিন্তু অন্য রকম বক্তৃতায় নজর কেড়েছেন লালুর ছেলে তেজপ্রতাপ। শঙ্খ বাজিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়ে তাক লাগান তিনি। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরান্ডি, হেমন্ত সোরেন, সিপিআই নেতা সুধাকর রেড্ডি, ডি রাজা, এনসিপির তারিক আনোয়ার-সহ ১৭টি দলের নেতা হাজির ছিলেন লালুর সভায়।
সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আরজেডির দাবি, প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। তৃপ্ত লালুর কথায়, ‘‘আগুনের এই ফুলকি বিহার থেকে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।’’