ফাইল চিত্র।
আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে পাঁচটি আসনে ইতিমধ্যেই জয় নিশ্চিত তৃণমূলের। ষষ্ঠ আসনটিতে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে যখন দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্ব, তখন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে কৌশলী বার্তা পাঠালেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের বক্তব্য, বামেদের সঙ্গে মিলে প্রার্থী বাছাই না করে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে কংগ্রেস যদি তৃণমূলের পছন্দসই কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করায়, তা হলে তাঁকে সমর্থনে আপত্তি নেই দলের। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
৮ জুন রাজ্যসভার নির্বাচন। রাজ্যের ৬টি আসনের এই দফায় তৃণমূলের চার এবং সিপিএম ও কংগ্রেসের এক জন করে সাংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বর্তমানে রাজ্যসভায় একটি আসন জেতার প্রশ্নে ভোটের যা অঙ্ক, তাতে একজন প্রার্থীকে ৪২ জন বিধায়কের ভোট পেতে হবে। সেই হিসেবে বিধানসভায় তৃণমূলের যা শক্তি (২১১ আসন), তাতে তাদের পাঁচ প্রার্থীর জেতা নিশ্চিত। প্রশ্ন রয়েছে ষষ্ঠ প্রার্থীকে ঘিরে। পরিস্থিতি যা, তাতে কংগ্রেস (৪৪ জন বিধায়ক হলেও বিক্ষুব্ধ প্রায় ৮ জন) ও বামফ্রন্ট (৩২ জন) একজোট হয়ে প্রার্থী দিলে তবেই সেই প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তা না করে যদি বাম বা কংগ্রেস আলাদা করে লড়ে, তা হলে ফায়দা পাবে তৃণমূলই।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ও সিপিএম দু’দলই বুঝতে পারছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী না দিলে জেতার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সিপিএম প্রার্থীকে বিশেষ করে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় পাঠানো নিয়ে দলের অন্দরেই সংশয় রয়েছে। তেমনই কংগ্রেসে প্রশ্ন উঠেছে যে, বেশি বিধায়ক থাকা সত্ত্বেও কেন দল নিজেদের প্রার্থী দাঁড় করাবে না? রাজ্যসভায় কেন নিজেদের শক্তি বাড়াতে উদ্যোগী হবে না হাইকম্যান্ড, সেই প্রশ্নও উঠেছে। ইতিমধ্যেই প্রদেশ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে শীর্ষ নেতৃত্বকে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী দিক এবং সেই প্রার্থীকে সমর্থন করুক সিপিএম।
তৃণমূল শিবিরও মনে করছে, ষষ্ঠ আসনটি জিততে শেষে হাত মেলাতে বাধ্য হবে কংগ্রেস ও সিপিএম। এই অবস্থায় কংগ্রেসকে বার্তা পাঠিয়ে এক ঢিলে অনেক পাখি মারলেন মমতা। যার প্রথমটি হল, ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের পথ খুলে ফেলা। এর ফলে বামেরা আরও একঘরে এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে রাজ্যে।