সনিয়া গাঁধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ বারের দিল্লি সফরে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে না। কারণ সনিয়া অসুস্থ। ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। সোমবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগে মমতা নিজেই এ কথা জানিয়ে যান।
বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছেন মমতা। কয়েক দিন আগে কলকাতায় এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। ফোনে কথা বলেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। সেই সব আলোচনায় মূলত অ-কংগ্রেসি ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের উপর জোর দেওয়া হয়। তবে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে বৈঠক সেরে মমতা বলেছিলেন, ‘‘এটা শুরু। ভবিষ্যতে কী হবে, তা পরে দেখা যাবে।’’
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট গড়লে বিরোধী ভোট আরও ভাঙবে। তা কতদূর বাস্তবসম্মত হবে, বলা কঠিন। মমতা তাই এখনই এ ব্যাপারে শেষ কথা বলতে রাজি নন। বরং কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার পরিসর খোলা রাখতে চান। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, সনিয়া এবং মমতা দুজনেই পরস্পর দেখা করতে আগ্রহী। তবে সনিয়া শিমলাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের পর শিমলায় প্রিয়ঙ্কার বাড়ি দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বৃষ্টির পর হঠাৎই ঠান্ডা লেগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ বারের সফরে যে ওই বৈঠকের সম্ভাবনা কম, তা বুঝিয়ে এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরে মমতাও বলেন, ‘‘সনিয়াজি অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর সঙ্গে আগেই আলোচনা হয়েছে। তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন, এই প্রার্থনা করি। সুস্থ হলে তবে কথা বলব।’’
আরও পড়ুন: একের বিরুদ্ধে একে রাজি মায়া, অখিলেশ
মমতার সমর্থনে সদ্য জিতে আসা কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি মনে করেন, রাজ্য স্তরে বিভিন্ন দলের বিরোধ যা-ই থাক, জাতীয় স্তরে বিরোধীদের এক ছাতার তলায় আসতে হবে। আর এই কাছাকাছি আসাই প্রমাণ করছে, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার কত ব্যর্থ প্রতিপন্ন হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার সনিয়া এবং মমতার মধ্যে এসএমএসে কথা হয়। তৃণমূল নেত্রীকে সনিয়া নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বলেন, আগামী দু’দিন তিনি হাসপাতালে থাকবেন। কিন্তু সুযোগ হলেই মমতার সঙ্গে কথা বলতে যে তিনি আগ্রহী সে কথাও জানিয়েছেন সনিয়া। ঘটনাচক্রে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এখন কর্নাটকে।
মমতা অবশ্য এ বার দিল্লিতে বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সংসদ চলাকালীন এর আগেও বহু বার আমি দিল্লি গিয়েছি। আমার দলের ৪৬ জন সাংসদ রয়েছেন। আমি নিজে সাত বার সাংসদ ছিলাম। অনেক নেতার সঙ্গে আমার পরিচয়, যোগাযোগ রয়েছে। কাল সংসদের সেন্ট্রাল হলে যাব। সেখানে অনেকের সঙ্গে দেখা হবে।’’ তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘দলনেত্রী জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলির সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। অন্য নেতারাও তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। তাই বিরোধী জোট গড়ার ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে সক্ষম।’’