প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চান, নীতি আয়োগের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলনগুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দিন। আর তাঁর দল প্রশ্ন তুলছে নীতি আয়োগের বৈঠকে তাঁর না থাকা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগ নিয়ে বিজেপির রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, যে পদ্ধতিতে নীতি আয়োগ ও মুখ্যমন্ত্রীদের বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে, তিনি সেই পদ্ধতিতেই বিশ্বাস করেন না।
নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকের ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই কেন্দ্রের তরফে আজ জানানো হয়, নীতি আয়োগের নিয়মে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে কোনও উপমুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে থাকতে পারেন। কিন্তু অন্য মন্ত্রী তাঁদের বিকল্প হতে পারেন না। মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি বিভিন্ন নীতি আয়োগের
বিভিন্ন সাব-কমিটিতেও মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে অন্য কোনও মন্ত্রীকে
নেওয়া হয় না। প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না রাজ্যের মুখ্যসচিব বা স্বরাষ্ট্রসচিবও। নীতি আয়োগের স্পষ্ট বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী কাউকে প্রতিনিধি করে পাঠালেও, বৈঠকে তাঁর প্রবেশাধিকার থাকে না।
আরও পড়ুন: চাষিদের আশীর্বাদ পেতেই অর্থবর্ষে নাড়াচাড়া
অতীতে জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতেন জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজেরাই আসতেন। তখনও মুখ্যমন্ত্রীর বদলে অন্য কোনও মন্ত্রীকে প্রতিনিধি করে পাঠানোর সুযোগ ছিল না। তবে জ্যোতিবাবু মাঝে মাঝে তাঁর সরকারের অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্রকে এবং একই ভাবে বুদ্ধবাবু অসীম দাশগুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে আসতেন ওই সব বৈঠকে।
মমতা ‘স্বচ্ছ ভারত’ নিয়ে নীতি আয়োগের সাব-কমিটির কমিটির সদস্য। শুধু নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদ নয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই কমিটিরও কোনও বৈঠকে থাকেননি। ফলে এই সব বৈঠকে বাংলার কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। তাদের সমালোচনার জবাবে মমতার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আপনি আচরি ধর্ম... !’’ তিনি প্রশ্ন তুলছেন কমিটি গড়ার পদ্ধতি নিয়েই। মমতার বক্তব্য, কোন কমিটিতে কোন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন তা ঠিক করার জন্যেও আলোচনার প্রয়োজন হয়। মমতার কথায়, ‘‘কোনও কমিটি নিয়ে আলোচনা নেই, হঠাৎ এক দিন বলা হবে হাজিরা দিতে! এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় ঐকমত্যের রাজনীতি নয়।’’
নীতি আয়োগ গঠনের পরে মোদী মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে তিনটি সাব-কমিটি গড়েছিলেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি ঢেলে সাজার জন্য গড়া কমিটির প্রধান করা হয় মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিয়ে সাব-কমিটির প্রধান হন পঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল। ‘স্বচ্ছ ভারত’ নিয়ে তৃতীয় একটি সাব-কমিটি গড়া হয়। মাথায় বসানো হয় অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। এই তিন কমিটি গঠন নিয়েও রাজনীতি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন মমতা। আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে এসে অভিযোগ করেছিলেন, এমন ভাবে মুখ্যমন্ত্রীদের বেছে বেছে কমিটির মাথা করা হচ্ছে, যাতে প্রধানমন্ত্রীকে কোনও বিরোধের সামনে পড়তে না হয়।