Manipur Clash

ফের অশান্ত মণিপুর

আরাম্বাই টেঙ্গলের সদস্যেরা কুকি-জ়োদের বাড়িতে আগুন লাগানো শুরু করেছে। কুকিরা প্রাণভয়ে জঙ্গলে পালিয়েছেন। মেইতেই মহিলারা রাস্তা আটকে রাখায় নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছতে পারছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ০৮:৫৫
Share:

ফের অশান্ত মণিপুর। ছবি: পিটিআই।

ভোটের ফল ঘোষণার পরেই ফের অশান্ত মণিপুর। গোটা রাজ্য এক বছরের বেশি সময় ধরে মেইতেই ও কুকি জনজাতিতে পুরোপুরি বিভাজিত হলেও অসম সীমানা সংলগ্ন জিরিবাম জেলা ছিল মোটের উপরে ব্যতিক্রম। কিন্তু এখন সেখানেও দু’দিন ধরে চলছে উত্তেজনা। এক মেইতেইয়ের দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে। আরাম্বাই টেঙ্গলের সদস্যেরা কুকি-জ়োদের বাড়িতে আগুন লাগানো শুরু করেছে। কুকিরা প্রাণভয়ে জঙ্গলে পালিয়েছেন। মেইতেই মহিলারা রাস্তা আটকে রাখায় নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছতে পারছে না।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেলে জিরিবাম গুলালতল এলাকার পরিচিত ব্যবসায়ী এস শরৎ কুমার সিংহের গলাকাটা দেহ ফাইজল পুঞ্জির জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই এলাকায় কুকি সম্প্রদায়ের বসতি থাকায় খুনের ঘটনায় জনজাতিদের অভিযুক্ত করে উত্তেজিত জনতা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। ভোটের আগে জমা নেওয়া লাইসেন্সধারী আগ্নেয়াস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানা য়। পরে জিরিবাম শহর-সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রায় ২৫টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দু’টি গির্জা ও একটি বেসরকারি স্কুলও ভস্মীভূত হয়। এল মুয়াংপাউ নামে এক কুকি প্রৌঢ় বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জিরিবাম ও পার্শ্ববর্তী তামেঙলঙ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। কার্ফুর উল্লেখ না থাকলেও সাধারণ জনতাকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। তার জেরে দুই জেলাতেই এ দিন দোকানপাট খোলেনি। চলেনি ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক যানবাহন। জিরিবাম জেলায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে দেখা গিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী তখন অবশ্য এসকর্ট করেছে তাঁদের। জনজাতি এলাকায় থাকা মেইতেই পরিবারগুলি আসাম রাইফেলসের পাহারায় এ দিন সকালেই সরে যায়।

Advertisement

জিরিবাম মোটের উপরে এত দিন শান্ত থাকলেও সেখানে সম্প্রতি কুকি সম্প্রদায়ের এক জন খুন হন। তারই জেরে শরৎ কুমার সিংহকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হলেও পুলিশ এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। তবে তাদের দাবি, উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। জিরিবাম ও তামেঙলঙে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আসাম রাইফেলস, সিআরপিএফ এবং মণিপুর পুলিশকে নিয়ে জিরিবামে একটি জয়েন্ট কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

এ দিকে, এনডিএ সরকারের শপথগ্রহণে যোগ দিতে আজ দিল্লি পৌঁছেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ও রাজ্য বিজেপির সভানেত্রী সারদা দেবী। দলীয় সূত্রে খবর, বীরেন রাজ্যের পরাজয়ের দায় মাথায় নিয়ে প্রথমে শপথগ্রহণে যাওয়ার আমন্ত্রণ সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁকে দিল্লি আসতে জোর দেন। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের ভোটবিপর্যয় ও চলতে থাকা সংঘর্ষ এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে পর্যালোচনায় বসবেন বীরেন। তার মধ্যেই দলে বীরেন-বিরোধী শিবির আবার সরব হচ্ছে। বিদায়ী সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন বীরেনের বিরুদ্ধে কথা বলায় এ বার তাঁকে ইনার মণিপুরে টিকিট দেওয়া হয়নি। দুই কেন্দ্রেই হারের পরে রঞ্জন বলেন, পরাজয়ের নৈতিক দায় নিয়ে বীরেন ও সারদার পদত্যাগ করা উচিত। দিল্লির বৈঠকে রাজ্য বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement