প্রতীকী ছবি।
নোট বাতিলের ধাক্কা না সামলাতেই ঘাড়ে চেপেছে নতুন জুজু জিএসটি। সেই ধাক্কায় এ বার গুয়াহাটিতে পুজোর বাজার যেমন জমল না, তেমনই ধুঁকছে পুজোর বাজেটও। স্পনসর আর বিজ্ঞাপনদাতাদের সিংহভাগ এখনও ব্যস্ত ঘর গুছোতে। ব্যবসায়ীরা নাজেহাল নতুন কর ব্যবস্থার সঙ্গে ধাতস্থ হতে। তাই পুজো আর পুজোর বাজার দুইই যেমন ম্রিয়মান, তেমনই অর্থমন্ত্রীর হুমকি সত্তেও সেই চিনা সামগ্রীতেই ছেয়ে গেল গুয়াহাটির ফ্যান্সিবাজার-লাখটুকিয়া।
জিএসটির ফলে বিভিন্ন সামগ্রীর দাম কত হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। নিশ্চিত হতে পারা যাচ্ছে না কার্ড ব্যবহারের কমিশনও। পুজো কমিটি ও কুমোরপাড়ার খবর, জিএসটির কোপে প্রতিমা তৈরি ও মণ্ডপ নির্মাণের খরচ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। আগে যে মূর্তি এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকায় তৈরি হত, সেই মূর্তির খরচ দাঁড়িয়েছে দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষে। প্রতিমার পোষাক, গয়নাসবই বেশি দামে কিনতে হয়েছে। পুজোয় স্পনসর ও বিজ্ঞাপনদাতার সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কম।
আরও পড়ুন: বিকানেরে দিল্লির যুবতীকে ২৩ জন মিলে গণধর্ষণ
ফ্যান্সিবাজারে ফুটপাথের দোকান হোক বা শো-রুম আগের মতো ভিড় নেই এ বছর। ছোট দোকানদারদের অনেকেই জানান, লেখাপড়া না জানা ছোট ব্যবসায়ীদের উপরে জিএসটি খুব চাপ সৃষ্টি করেছে। বড় শো-রুমের মালিকরাও জানান, কোন সামগ্রীর উপরে কত শতাংশ কর বসবে তা অভিজ্ঞ অ্যাকাউন্ট্যান্টরাও ঠিক করতে পারেননি। এই সুযোগে, বাজার ছেয়ে ফেলেছে চিনা আলো, খেলনা, বাজি, ঘর সাজানো সামগ্রী। বাজারের খবর, অন্তত হাজার কোটির চিনা সামগ্রী পুজো থেকে দেওয়ালির মরশুমে গুয়াহাটির বাজারে আনা হচ্ছে। শিক্ষা ও অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার নিজের মন্ত্রকই আনন্দরাম পুরস্কার হিসেবে ম্যাট্রিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের ‘মেড ইন চায়না’- ল্যাপটপ দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, জিএসটির সৌজন্যে পুজো থেকে দেওয়ালি বাজারও চিনের হাতেই থাকবে।
জিএসটির ধাক্কা, বছরের গোড়া পর্যন্ত চলা নোট বাতিলের ধাক্কা ও বাজারে মন্দা- সব মিলিয়ে বড় ও মেজো পুজোগুলিতে স্পনসরও জোটেনি সে ভাবে। অনেক পুজোর বাজেটেই চলেছে কাটছাঁট। পুজো কমিটিগুলির আক্ষেপ, ব্যবসায়ী সংস্থাগুলিতে গেলেই শুনতে হয়েছে নোট বাতিলোত্তর পর্বে বিরাট ক্ষতির গল্প। জিএসটির হিসেব মেলাতে ব্যস্ত মালিকপক্ষ মোটা চাঁদা শুনলেই হাতজোড় করেছেন।