হাজারিবাগ শহরে খালেদের ‘রোটি ব্যাঙ্ক’

গত কয়েক মাস ধরে মোবাইল ‘রোটি ব্যাঙ্ক’ নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন খালেদ। হাজারিবাগের নবাবগঞ্জে তাঁর বাড়ি ও ওষুধের দোকান। সকাল সাড়ে ন’টায় দোকান খোলেন। তার আগেই বাইক নিয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গৃহহীন, দরিদ্র, অসহায় মানুষদের সকালের খাবার দিয়ে ফিরে আসেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ০৪:১৩
Share:

খাবার বিলোচ্ছেন খালেদ ভাই। হাজারিবাগে। —নিজস্ব চিত্র

সকালেই মোটরবাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন হাজারিবাগের রাস্তায়। বছর পঞ্চান্নর মহম্মদ খালেদের বাইকের ক্যারিয়ারের দু’দিকে ঝোলানো দুটো বড় ক্যান। একটিতে রুটি, পুরি, কচুরি। অন্যটিতে তরকারি। খালেদকে দেখেই ফুটপাথের ভবঘুরে, ভিখারিদের মুখে হাসি ফোটে। নড়েচড়ে বসেন তাঁরা। চলে এসেছেন খালেদ ভাই। সকালের খাবার নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না!

Advertisement

গত কয়েক মাস ধরে এ ভাবেই মোবাইল ‘রোটি ব্যাঙ্ক’ নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন খালেদ। হাজারিবাগের নবাবগঞ্জে তাঁর বাড়ি ও ওষুধের দোকান। সকাল সাড়ে ন’টায় দোকান খোলেন। তার আগেই বাইক নিয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গৃহহীন, দরিদ্র, অসহায় মানুষদের সকালের খাবার দিয়ে ফিরে আসেন। রোজা রেখেছেন বলে সারাদিন নিজে কিছু খান না। খালেদের কথায়, “রোজা তো একমাসের। আর ওরা তো প্রায় সারা বছরই অভুক্ত থাকে। তাই চেষ্টা করছি।’’

তাঁর এই প্রয়াস শুরু হয়েছিল নিজের বাড়িতে তৈরি কিছু রুটি আর ডাল দিয়ে। খাবার তৈরি করতেন তাঁর স্ত্রী তবসুম খানম। বাড়ির আশপাশের কয়েকজন ফুটপাথবাসী ভবঘুরেকে খাবার দিতেন তাঁরা। এর পর ধীরে ধীরে খালেদ তাঁর পরিধি বাড়াতে থাকেন।

Advertisement

শুধু নবাবগঞ্জ নয়, এখন খালেদের এই ‘রোটি ব্যাঙ্ক’ ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় পুরো হাজারিবাগ শহর জুড়ে। খালেদের এই প্রয়াসে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে হাজারিবাগ শহর। খালেদকে সকালে গরম লুচি, তরকারি অথবা কচুরি, ডাল দিয়ে সাহায্য করে হাজারিবাগের বেশ কয়েকটি হোটেল, দোকান। সন্তোষী মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্মী অলোক প্রসাদ বলেন, “খালেদ ভাইয়ের এই উদ্যোগকে আমরা কুর্নিস করি। ওর রোটি ব্যাঙ্ককে রোজ কুড়ি পঁচিশটা কচুরি দিয়ে সাহায্য করি।”

কোনও বাসি খাবার কিন্তু খালেদ ভাই নেন না। দোকানদারদের বলে দিয়েছেন, ‘‘ফেলে দেওয়া খাবার বা বাসি খাবার নয়, সকালে তৈরি গরম গরম রুটি, পুরি, তরকারি চাই। আমরা যা খাই তাই ওঁদের দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন