উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে চেষ্টা করা হয়েছিল শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়ার। তাই ডাকা হয়েছিল সব এনডিএ শরিককেই। আমন্ত্রণ যায় শরিক নেতা মেহবুবা মুফতি ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর কাছেও। শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু উপস্থিত থাকলেও, গরহাজির রইলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
তবে ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা স্বীকার করছেন, সৌজন্য দেখিয়েই শরিক দলের সব মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু শরিক দলের নেতা হলেও যোগী আদিত্যনাথের শপথ মঞ্চে যে মেহবুবা আসতে পারবেন না তা জানত দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘আজ এখানে এলে উপত্যকায় মেহবুবা নতুন করে অস্বস্ততে পড়তেন। যা বিজেপির কাছেও এই মুহূর্তে কাম্য নয়।’’
উত্তরপ্রদেশে আজ যে মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছে তাতে স্থান পেয়েছেন সব শ্রেণির প্রতিনিধিরাই। উচ্চবর্ণের জাঠ, রাজপুত বা ব্রাহ্মণ নেতারা যেমন মন্ত্রী হয়েছেন, তেমনি ঠাঁই পেয়েছেন কুর্মি, রাজভড়, নিষাদ বা লোধের মতো পিছিয়ে থাকা শ্রেণির প্রতিনিধিরাও। এমনকী যোগী আদিত্যনাথের মতো কট্টর হিন্দু নেতার মন্ত্রিসভায় রয়েছেন মুসলিম নেতা মহসিন রাজা। দলের এই সংখ্যালঘু নেতা ভোটে টিকিট না পেলেও, সংখ্যালঘু সমাজকে বার্তা দিতে মন্ত্রী করা হয়েছে তাঁকে। গত মন্ত্রিসভায় ১৫ জন মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন। এ বারে মন্ত্রিসভায় সংখ্যালঘু মন্ত্রী একমাত্র মহসিন।
জাতপাতের রাজনীতিতে দীর্ণ উত্তরপ্রদেশে মন্ত্রিসভার গঠন কী হবে তা নিয়ে সংশয় ছিল দলেরই। নরেন্দ্র মোদী ভোট প্রচারে উন্নয়নকে জাতপাতের উর্ধ্বে রেখেছিলেন। আবার লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মন্ত্রিসভায় সব শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব রাখার পথে হেঁটেছেন দলীয় নেতৃত্ব। দল যে সব শ্রেণিকেই গুরুত্ব দেবে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী ও দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের মধ্যে দিয়েই। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে ঠাকুর। তাঁর দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য এবং দীনেশ শর্মা ওবিসি ও ব্রাহ্মণ।
মন্ত্রিত্বের আর্শীবাদ থেকে বঞ্চিত হননি অন্য দল থেকে আসা নেতারাও। রীতা বহুগুণা জোশীর মতো প্রাক্তন কংগ্রেসি বা দারা সিংহ চৌহানের মতো প্রাক্তন বিএসপি নেতা মন্ত্রী হয়েছেন। আবার শপথ নিয়েছেন লোধ নেতা সন্দীপ সিংহও। যিনি কল্যাণ সিংহের নাতি। একই ভাবে শরিক রাজভড় দলের ওমপ্রকাশ রাজভড় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি হিসাবে শপথ নেন সত্যেন্দ্র পচৌরি, রমাপ্রসাদ শাস্ত্রী, শ্রীকান্ত শর্মা, সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। সিদ্ধার্থনাথ লালবাহাদুর শাস্ত্রীর নাতি।