চিটফান্ডেও মেহুলভাই!

পশ্চিমবঙ্গের সারদার মতোই চিটফান্ডের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন মেহুল। এবং সেটা খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই! ২০১৫ সাল থেকে গুজরাতে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা একাধিক অভিযোগও দায়ের করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

শুধু ব্যাঙ্কের টাকা নয়, চিটফান্ডের কায়দায় আমজনতার টাকা লুঠ করার অভিযোগও উঠেছে মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে। যিনি নরেন্দ্র মোদীর কথায়, ‘আমাদের মেহুলভাই’!

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের সারদার মতোই চিটফান্ডের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন মেহুল। এবং সেটা খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই! ২০১৫ সাল থেকে গুজরাতে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা একাধিক অভিযোগও দায়ের করেন। অভিযোগ, গুজরাত পুলিশ সে সব নিয়ে কোনও এফআইআর দায়ের না করে চুপচাপ বসেছিল এত দিন। উল্টে মোদীর বহুল প্রচারিত ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এ ফলাও করে প্রচার হয় মেহুলের সংস্থার। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের মেয়ে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের স্ত্রীও মেহুলের প্রচারে প্রচারে সামিল হন। এ বছর ২৬ জানুয়ারি মেহুল বিদেশে পালানোর পরে, ২৮ জানুয়ারি ওই সব অভিযোগ নিয়ে নড়ে বসেছে গুজরাত পুলিশ।

এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ তথ্য আজ সামনে এনে দিল্লিতে কংগ্রেস নেতারা বলেন, আমজনতার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লুঠ করেছেন মেহুল। অভিযোগ, তাঁর সংস্থা গীতাঞ্জলিতে এক বছর, দু’বছর, তিন বছরের জন্য টাকা জমা রাখতে বলা হত। সেই টাকায় গয়না কিনতে পারতেন গ্রাহকরা। এক বছরের প্রকল্প হলে গ্রাহক দিতেন ১১ মাসের টাকা। শেষতম, অর্থাৎ দ্বাদশ মাসের কিস্তি মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংস্থাটি। ২০১৪ সাল পর্যন্ত সব ঠিক চলছিল। তার পর থেকেই টাকা লুঠ করা শুরু হয় বলে অভিযোগ। টাকা ফেরত তো দেওয়াই হয়নি, গয়নাও কিনতে পারেননি অনেকে। এ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়লেও পুলিশ নড়ে বসেনি।

Advertisement

গুজরাতের কংগ্রেস নেতা শক্তিসিংহ গাহিলের কথায়, ‘‘এটি আপাদমস্তক চিটফান্ড। পশ্চিমবঙ্গে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এখানেও হওয়া উচিত। মোদী সরকারের উচিত, অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।’’ কংগ্রেস নেতাদের মতে, এখন কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্তে নেমে অনেক কিছু জানতে পারার ভান করছে। কিন্তু গুজরাত সরকার আগে থেকেই সব জানত। তা ছাড়া, এই প্রতারণা শুধু গুজরাতে নয়, অন্য রাজ্যেও ছড়িয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্তরা সামনে এলেই পুরো ছবিটা স্পষ্ট হবে। কংগ্রেস নেতাদের কটাক্ষ, ২০১৪-র লোকসভা প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সারদা-সহ চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলে নিয়মিত হুঙ্কার দিতেন মোদী। ক্ষমতায় এসেই সব ভুলে গিয়েছেন! আসলে তাঁর নিজের রাজ্যেই তো এগুলো রমরমিয়ে চলছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন