সংসদে ক্ষমা চাইলেন গিরিরাজ

কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়টি কার্যত ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। সেই বিষয়টিই আজ লোকসভায় খুঁচিয়ে তুলে গিরিরাজকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করলেন কংগ্রেস সাংসদরা। এ দিন লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদরা দাবি জানাতে থাকেন, সনিয়ার বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য গিরিরাজকে পদত্যাগ করতে হবে। গিরিরাজকে ভর্ৎসনা করেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২২
Share:

কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়টি কার্যত ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। সেই বিষয়টিই আজ লোকসভায় খুঁচিয়ে তুলে গিরিরাজকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করলেন কংগ্রেস সাংসদরা।

Advertisement

এ দিন লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদরা দাবি জানাতে থাকেন, সনিয়ার বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য গিরিরাজকে পদত্যাগ করতে হবে। গিরিরাজকে ভর্ৎসনা করেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও। আর প্রবল চাপের মুখে পড়ে লোকসভায় দাঁড়িয়ে মন্ত্রীকে বলতে হল, ‘‘আমি কাউকে আঘাত দিতে চাইনি। কিন্তু আমার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি।’’

আর সব দেখেশুনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রামলীলা ময়দানে কাল রাহুল গাঁধীর কৃষক-দরদি সভা কংগ্রেসকে অনেকটাই চাঙ্গা করেছে। যে কারণে এখন কংগ্রেস নেতৃত্ব নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কোনও অস্ত্রই হাতছাড়া করতে চাইছেন না। তা-ও বিষয়টি যখন সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে। তাই আজ সংসদ শুরু হতেই থিতিয়ে যাওয়া গিরিরাজের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়ল কংগ্রেস।

Advertisement

কী বলেছিলেন গিরিরাজ? কিছু দিন আগেই সনিয়া সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘রাজীব গাঁধী যদি নাইজেরিয়ার মহিলাকে বিয়ে করতেন এবং তিনি যদি শ্বেতাঙ্গ না হতেন, তবে কংগ্রেস কি তাঁর নেতৃত্ব মেনে নিত।’’

কার্যত থিতিয়ে পড়া এই বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস এ দিন সরব হওয়ায় হকচকিয়ে যান গিরিরাজ। কংগ্রেস সাংসদরা আরও দাবি জানাতে থাকেন, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি—কেউই গিরিরাজের মন্তব্যকে সমর্থন করে না। কিন্তু এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে টেনে আনা উচিত নয়।’’ কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়গের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘গিরিরাজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য। তাই প্রধানমন্ত্রীকেও ক্ষমা চাইতে হবে।’’এর পরেই ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদরা। হইচইয়ের জেরে অধিবেশন ২০ মিনিটের জন্য মুলতুবি করে দেন স্পিকার। ফের অধিবেশন শুরু হলে বেঙ্কাইয়া নায়ডু গিরিরাজকে ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেন।

এই ব্যাপারে বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা চাইলে মোদীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের কটাক্ষগুলিও তুলে ধরতে পারতাম। কিন্তু এখন সংসদ চালাতে হবে। বিলগুলি পাশ করাতে হবে। তাই বিবাদে না জড়িয়ে সরকারের লক্ষ্য বিরোধীদের শান্ত রাখা।’’ ওই নেতা আরও জানান, সেই কারণেই রাহুল গাঁধীর বক্তৃতার সময় বিজেপি শিবির থেকে যখন নানা মন্তব্য উড়ে আসছিল, তখন বেঙ্কাইয়া নিজের সাংসদদের শান্ত থাকতে বলেন। বিজেপি নেতা যাই বলুন, গোটা বিষয়টিতে কিন্তু নিজেদের জয়ই দেখছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, মোদী ক্ষমা চাইবেন না এবং গিরিরাজও যে ইস্তফা দেবেন না, তা তাঁরা জানতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন