হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীতে এসেই তাঁর রিমোটটি খোয়া গিয়েছিল। নিজের গ্রহে ফেরার সেই একমাত্র মাধ্যম হারিয়ে আতান্তরে পড়া পিকে গিয়েছিল ভগবানের কাছে। কিন্তু সেখানেও কাজ না হওয়ায় প্রণামী বাক্স থেকে ভগবানকে দেওয়া ‘ফি’ ফেরত নিতে গিয়েছিল সে। কিন্তু এ দেশে ইশ্বরের ‘পাওনা’য় হাত দিলে যে কী হতে পারে, তার সামান্য আন্দাজও ছিল না পিকের। রে রে করে তেড়ে এল ইশ্বরের স্বঘোষিত রক্ষীরা। পিকের মতোই ‘মারাত্মক’ অপরাধ করে ফেলেছিল অঞ্জু। ৯ বছরের অবোধ বালক মন্দিরের প্রণামী বাক্স থেকে এক টাকা নিয়েছিল। পিকের মতো ওরও জ্ঞান হয়নি যে, প্রণামীর বাক্সে হাত গলালে কপালে কী জুটতে পারে। বান্ধবীর উপস্থিত বুদ্ধিতে পিকে সে যাত্রা রক্ষা পেলেও ভাগ্য অতটা ভাল ছিল না অঞ্জুর। ‘ভয়ঙ্কর’ ওই অপরাধের জন্য বেঁধে পেটানো হল ওই বালককে।
বাবা-মায়ের সঙ্গে মন্দিরে ঘুরতে এসে কিছু না বুঝেই প্রণামী বাক্স থেকে এক টাকা তুলে নিয়েছিল অঞ্জু। মন্দিরেরই এক পুরোহিত দেখে ফেলায় বছর নয়েকের বালকটির হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হল।
আরও পড়ুন: ভিক্ষাজীবীদের পাশে দাঁড়াতে চাকরিই ছেড়ে দিলেন এই ইঞ্জিনিয়র
গত বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে মণিপুরের এক মন্দিরে। বাবা-মায়ের সঙ্গে মণিপুরের কাকরাইয়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিল অঞ্জু। বৃহস্পতিবার সেখানকারই এক স্থানীয় মন্দিরে ঘুরতে গিয়েছিল সে। মন্দিরের দানপাত্র থেকে এক টাকা নেওয়ার সময় নজরে পড়ে ভোলা বাবা নামে মন্দিরের এক পুরোহিতের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, এই ঘটনা নজর পড়তেই অঞ্জুকে পাকড়াও করেন ওই পুরোহিত। বুধবার মন্দির থেকে একটি ব্রোঞ্জের বাঁশি চুরি গিয়েছিল। ওই পুরোহিত দু’টি ঘটনার জন্য অঞ্জুকেই সন্দেহ করেন। এরপরেই তার হাত-পা বেঁধে মারধর করেন তিনি। পুরো ঘটনাটির একটি ভিডিও পুলিশের হাতে আসে শনিবার রাতে। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
ওই পুরোহিত এবং স্থানীয়দের দাবি, অঞ্জু স্বীকার করেছে যে সে-ই বাঁশিটি চুরি করেছিল। পরে সেটি নাকি এক মহিলার কাছে সে ৫০ টাকায় বিক্রিও করে দেয়। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।