ডিজিটাল ভারত, নতুন মন্ত্রে ঝাঁপাতে চান মোদী

কেমন হবে নতুন ভারতের ছবি? ব্যাখ্যাটা দিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। ই-গভর্নেন্স থেকে আমাদের পৌঁছে যেতে হবে এম-গভর্নেন্সে। তার পরেই লঘু চালে মন্তব্য, এই এম-এর অর্থ কিন্তু মোদী নয়, মোবাইল!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ২২:১৪
Share:

বিজ্ঞান ভবনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী।

কেমন হবে নতুন ভারতের ছবি?

Advertisement

ব্যাখ্যাটা দিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। ই-গভর্নেন্স থেকে আমাদের পৌঁছে যেতে হবে এম-গভর্নেন্সে। তার পরেই লঘু চালে মন্তব্য, এই এম-এর অর্থ কিন্তু মোদী নয়, মোবাইল!
ভারতের কেন্দ্র, রাজ্য ও পঞ্চায়েতগুলি নিয়ে যে ত্রিস্তরীয় শাসন ব্যবস্থা, তার ভোল পাল্টে দিতে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’-র পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন মোদী। ভাবনাটা এমন যে বিশ্বের সব থেকে বড় গণতন্ত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে যাবতীয় সরকারি কাজকর্ম জুড়ে যাবে ডিজিটাল পরিকাঠামোয়। সহজ হয়ে যাবে শিল্প-বাণিজ্যের রাস্তাটাও। আর প্রত্যন্ত গ্রামের পঞ্চায়েতও ডিজিটাল যোগসূত্রে সম্পর্ক গড়ে তুলবে বাকি পৃথিবীর সঙ্গে। ২০১৯-এর মধ্যে দেশের আড়াই লক্ষ গ্রাম জুড়ে যাবে টেলিযোগাযোগ আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

এমন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে যে হেতু স্বপ্ন ছোঁয়ার চেষ্টা, তাই প্রযুক্তি ও বিষয়টির বাণিজ্যিক ভিতটাও হতে হবে শক্ত। সেটা ভেবেই আজ থেকে দেশে ডিজিটাল সপ্তাহের সূচনা করলেন মোদী। ডিজিটাল জগতে বিনিয়োগের পথ খোঁজাই এর মূল উদ্দেশ্য। তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, ২০২০ সালের মধ্যে এই ক্ষেত্রের প্রযুক্তি আমদানিকারক দেশের তকমাটা তুলতে হবে ভারতকে। তাই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-য় যে ভাবে জোর দিয়েছেন মোদী, একই ভাবে তেমনি ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’-র কর্মকাণ্ডে।

Advertisement

এ দিন ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে নতুন ভারতকে নিয়ে তাঁর ভাবনা ও স্বপ্নকে তুলে ধরেছেন মোদী। বলেছেন, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সরকারি কাজ হবে স্বচ্ছ, হাইস্পিড ডিজিটাল হাইওয়ে জুড়বে গোটা দেশকে, তথ্য-প্রযুক্তি ও এই ক্ষেত্রের কর্মীরা বিদেশ থেকে আসবেন না ভারতকেই পুরোপুরি ভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে, ব্যাঙ্কগুলি হয়ে উঠবে কাগজহীন আর দেশের দরিদ্র মানুষের কাছেও পৌঁছে দেওয়া যাবে ই-পরিষেবা।


‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সূচনা করলেন মোদী।

ভারতের মতো দেশ, স্বপ্নের ডানা ভাসিয়ে দিলেও বাস্তব পরিস্থিতিটা কিন্তু ঘোরালো। সে কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের অন্য দেশগুলির নিরিখে ইন্টারনেটের স্পিডে এই মুহূর্তে ১১৫ তম স্থান ভারতের। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে, নতুন দিন সৃষ্টি করতে তাই শিল্পপতিদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর ডিজিটাল সপ্তাহের শুরুতেই দেশের শিল্প মহল বিপুল সাড়াও দিয়েছে। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রি জানিয়েছে, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কর্মসূচিতে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তারা। মুকেশ অম্বানীর মন্তব্য, ‘‘সাধারণ ভাবে কাজের ক্ষেত্রে শিল্প মহল সরকারের থেকে এগিয়ে থাকে। কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই যে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারই অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।’’ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পরিকল্পনার সমর্থনে এগিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। কুমারমঙ্গলম বিড়লা জানিয়েছেন আগামী পাঁচ বছরে সাতশো কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছেন তাঁরা। উইপ্রো চেয়ারম্যান আজিম প্রেমজি, টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি, এয়ারটেলের সুনীল ভারতী মিত্তল, রিলায়্যান্সের অনিল অম্বানীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এখানেই মোদীর দাবি, ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে, চাকরি হবে ১৮ লক্ষ মানুষের।

আগামী ভারতের কথা বোঝাতে আজকের শিশুদের কথা টেনে আনেন মোদী। তার মন্তব্য, চশমা কিংবা কলম হাতে দিন, এখনকার বাচ্চারা ছুঁয়েও দেখবে না। ওরা আগ্রহী আপনার মোবাইলটা নিতে। তা হলেই দেখুন, শিশুরাও এখন বুঝছে ডিজিটালের শক্তি!

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন