একসঙ্গে ভোটে নারাজ বিরোধীরা

যে ভাবে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের মতো বিরোধীরা ‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাবের বিরোধিতায় এককাট্টা, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চান লোকসভা ও সব রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এক সঙ্গে হোক। দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবি তুলছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে
রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে আগামী শনি-রবিবার দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছে আইন কমিশন। কিন্তু যে ভাবে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের মতো বিরোধীরা ‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাবের বিরোধিতায় এককাট্টা, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে কেন্দ্র। বিজেপির একাংশের আশঙ্কা, বিরোধীদের চাপে প্রস্তাব বাতিল তো হবেই, উল্টে একে কেন্দ্র করে বিরোধীদের এক জোট হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হল।

Advertisement

এক সঙ্গে ভোট নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়াও শিক্ষাবিদ, আইনবিদ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের মতামত নিয়েছে কমিশন। এ নিয়ে দ্বিতীয় বার মতামত জানতে আগামী ৭-৮ জুলাই আলোচনার জন্য দিল্লিতে ডাকা হয়েছে জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের প্রতিনিধিদের। আজ মোদী বলেন, ‘‘এটা আমার প্রস্তাব নয়।
লালকৃষ্ণ আডবাণী-প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বরা ওই প্রস্তাবের হয়ে সওয়াল করেছেন। সম্প্রতি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীও একে সমর্থন করেছেন। ১৯৪৭ সালেও কিন্তু দু’টি ভোট এক সঙ্গে হয়েছিল।’’

প্রস্তাব যে হেতু মোদীর, বিজেপি স্বাভাবিক ভাবেই পক্ষে। তাদের যুক্তি, এক সঙ্গে ভোট হলে খরচ কমবে। নির্বাচনী আচরণবিধির ফাঁসে উন্নয়ন থমকে যাবে না।
নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের মতে, ‘‘এতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপরে মানুষের ভরসা অটুট থাকবে।’’ যদিও বিরোধীরা, বিশেষত কংগ্রেস শুরু থেকেই জোর করে এই ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে। তাদের আশঙ্কা, বিরোধীদের কাছে বাধা পেয়ে সংসদে যৌথ অধিবেশন করে বিলটি পাশ করিয়ে নিতে পারে সরকার।

Advertisement

দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার তাই আইন কমিশনের পরিবর্তে বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনার পক্ষে। তৃণমূল, সিপিএম ওই প্রস্তাবের নেপথ্যে সাংবিধানিক কাঠামো ভাঙার চেষ্টা দেখছে। সরব সপা-বিএসপি’র মতো দলগুলিও। সংবিধানের সব সংস্থান রাতারাতি বদলে এক সঙ্গে দেশ ও সব রাজ্যের ভোট করার উদ্যোগ কেন নেওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ইচ্ছে হলেই সব কিছু করা যায় নাকি?’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও প্রাক্তন সাংসদ নীলোৎপল বসু বলেন, ‘‘খরচ কমানোর যুক্তি দেখিয়ে আসলে সাংবিধানিক কাঠামো ভাঙার চেষ্টা এটা! ’’ পরিস্থিতি দেখে আইন ও নির্বাচন কমিশনের কর্তারা বুঝতে পারছেন, আপাতত প্রস্তাবটি ঠান্ডা ঘরে পাঠানো ছাড়া উপায় নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন