পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার লড়াই, প্রধানমন্ত্রীর পাখির চোখ কিন্তু উত্তরপ্রদেশ

নির্বাচন কমিশন পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেও নরেন্দ্র মোদীর পাখির চোখ ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যের বিধানসভা ভোট ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হতে চলেছে বলেই মত সব দলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২১
Share:

নির্বাচন কমিশন পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেও নরেন্দ্র মোদীর পাখির চোখ ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যের বিধানসভা ভোট ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হতে চলেছে বলেই মত সব দলের।

Advertisement

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী আজ জানিয়েছেন, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। উত্তরপ্রদেশে ভোট সাত দফায়। মণিপুরে দু’দফায়। বাকি তিন রাজ্যে ভোট হবে এক দফায়। ফল প্রকাশ ১১ মার্চ।

গোয়া ও পঞ্জাবে বিজেপির দুর্গ রক্ষার লড়াই। গোয়া নিয়ে বিজেপি আশাবাদী হলেও পঞ্জাবে অকালি-বিজেপি জোট নড়বড়ে। ওই রাজ্যে শুরুতে অরবিন্দ কেজরীবালের আপ এগিয়ে থাকলেও এখন মূল লড়াই কংগ্রেস এবং বিজেপি-অকালি জোটের। উত্তরাখণ্ডেও মূল লড়াই কংগ্রেস বনাম বিজেপি। কংগ্রেসের হাতে থাকা রাজ্যটি দখল নিয়ে আশাবাদী বিজেপি। মণিপুর ধরে রাখতে মরিয়া কংগ্রেস জোট।

Advertisement

কিন্তু বিজেপি জানে, এসপার-ওসপার লড়াই হবে উত্তরপ্রদেশে। কয়েকটি বিষয়ে তাই নজর রাখছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রথমত, তাঁরা চাইছেন সপায় ভাঙন। যাতে বাজেয়াপ্ত হয় সাইকেল প্রতীক। দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘু ভোট একটি দলের পক্ষে গেলে বিজেপির পক্ষে তা অসুবিধাজনক। সপা, মায়াবতী ও কংগ্রেসের মধ্যে এই ভোট ভাগাভাগি হলেই আখেরে লাভ হতে পারে মোদীর দলের। তৃতীয়ত বিজেপি মনে করে, নোট বাতিলের ফলে ধনীরা অসুবিধায়। এ নিয়ে গরিবদের মধ্যে আরও প্রচার করা হবে। এতে গ্রামীণ এলাকায় জাতপাতের সমীকরণ ভেস্তে দিয়ে মোদী-হাওয়া তোলা সম্ভব। চতুর্থত, রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণ। গত লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে একাধিক গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে ভোটে লাভ হয়েছিল বিজেপির। বিহারের ধাঁচে এখানেও আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে দিয়ে সংখ্যালঘু ভোট কাটার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।

সপা-য় যুযুধান দু’পক্ষের আলোচনা জারি রয়েছে আজও। কিন্তু জাতীয় ক্ষেত্রে অখিলেশের নেতৃত্ব যে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে, তা স্পষ্ট। মুলায়ম এক দিকে শিবপাল ও অমর সিংহদের বোঝাচ্ছেন। আবার ছেলেকে বোঝাচ্ছেন, শিবপাল-অমরের হাতে আসন বণ্টনের কিছু দায়িত্ব দিলে তাঁদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।

আর এক চরিত্র মায়াবতী শুরুতেই মস্ত ঝুঁকি নিয়েছেন। ৯৭টি অর্থাৎ এক-চতুর্থাংশ আসনে সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছেন। অথচ দলিত প্রার্থী দেওয়া হয়েছে ৮৭টি আসনে। মায়ার আশা, সংখ্যালঘু ভোট তাঁর পক্ষে থাকবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা না হলে এবং সপা না ভাঙলে অখিলেশ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরে আসতে পারেন। আবার মায়া বেশ কিছুটা সংখ্যালঘু ভোট পেলে ফায়দা হতে পারে বিজেপির। মোদীর দল চায়, ভোটের পরে তাদের সঙ্গেই জোট করুন মায়াবতী। সে জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বার্তা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে।

প্রতিপক্ষ শিবিরে মহাজোটের তৎপরতা। রাহুল গাঁধী বুঝিয়েছেন, তিনি অখিলেশের পাশে। যদিও আসন ভাগ নিয়ে জট কাটেনি। বর্তমানে ২৭টি আসন রয়েছে কংগ্রেসের। ১০০টির কাছাকাছি আসন চেয়েছে তারা। কিন্তু ৫০-৬০টির বেশি কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি নন অখিলেশ।

তা সত্ত্বেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুই দলই জোটের পক্ষে। একই কারণে লালু প্রসাদের জামাই তথা মুলায়মের নাতজামাই তেজপালকে নিজের শিবিরে আনতে আগ্রহী অখিলেশ। উদ্দেশ্য, লালুকে বার্তা দেওয়া। যাতে আগামী লোকসভায় বিহার ও উত্তরপ্রদেশে মহাজোট লড়তে পারে বিজেপির বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন