নিউ ইয়র্কে শরিফকে বয়কট করে মুশারফকে জবাব দেবেন মোদী

বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এমনকী নেপালও রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপূঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পার্শ্ববৈঠকের তালিকায় নেই পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশযাত্রার ৪৮ ঘণ্টা আগে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকের কোনও পরিকল্পনা নেই ভারতের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৪
Share:

বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এমনকী নেপালও রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপূঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পার্শ্ববৈঠকের তালিকায় নেই পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশযাত্রার ৪৮ ঘণ্টা আগে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকের কোনও পরিকল্পনা নেই ভারতের।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে না বসলেও, মোদী তাঁর মার্কিন সফরে ‘গ্রাউন্ড জিরো’ (৯/১১-র হামলায় ধ্বংস হওয়ার আগে যেখানে ‘ওয়র্ল্ড ট্রেড সেন্টার’ ছিল) দেখতে যাবেন। তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসবে সন্ত্রাস এবং মুম্বই হামলার প্রসঙ্গও। এই রাষ্ট্রপূঞ্জের বক্তৃতাতেই একদা প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ গুজরাত দাঙ্গার উল্লেখ করে কটুকাটব্য করেছিলেন মোদীকে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এ বার সেই মঞ্চেই পাকিস্তানকে কার্যত বয়কট করে, পাল্টা জবাব দিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী।

অথচ নিজের শপথ অনুষ্ঠানে নওয়াজ শরিফকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন মোদী। কিছুটা অভূতপূর্ব ভাবে প্রথম দিনই উদার হাত বাড়ানো হয়েছিল নয়াদিল্লির তরফে। নিজের দেশের মোল্লাতন্ত্র এবং কট্টরবাদীদের সঙ্গে পাঞ্জা কষে সেই আমন্ত্রণ রক্ষাও করেন নওয়াজ। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে স্থির হয় যে বিদেশসচিব পর্যায়ে ফের আলোচনা শুরু হবে। কিন্তু পাক হাইকমিশনার আব্দুল বসিত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার পরে সেই আলোচনা ভেস্তে যায়। নয়াদিল্লি জানিয়ে দেয়, এই আচরণ শান্তি প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।

Advertisement

ইসলামাবাদের দিক থেকে অবশ্য এখনও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা চলছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোণঠাসা শরিফ ভারতের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সম্প্রতি তাঁর নির্দেশে এই বসিতই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং বিদেশসচিব সুজাতা সিংহের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠকেও জট খোলেনি।

মোদী চান পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কের ফলে বাণিজ্যে লাভবান হোক ভারত। এ জন্য ‘ট্র্যাক টু কূটনীতি’ও চলছে। কিন্তু দেশবাসীর আবেগকে অগ্রাহ্য করে, সঙ্ঘ পরিবারের মতামতকে অবজ্ঞা করে এখনই পাকিস্তানের সঙ্গে কথা শুরু করতে চাইছেন না মোদী। বরং কিছুটা কড়া অবস্থানই নিতে চান তিনি।

একই কথা প্রযোজ্য চিনের ক্ষেত্রেও। ভারত-চিন সীমান্তের চুমার এলাকায় ঢুকে পড়া চিনা সেনারা এখনও সরেনি। চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সফরের পর ভারতীয় নেতৃত্ব ভেবেছিল, এ বার জট খুলবে। কিন্তু তার লক্ষণ এখনও নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, কেন এমন হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা চলছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া চিনা সেনারা এ কাজ করছে বলে মনে করছে না সাউথ ব্লক। তার উপর গত কাল চিনফিং তাঁর সেনাবাহিনীকে ‘আঞ্চলিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার’ ডাক দেওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। তবে আজ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে তাদের প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের সঙ্গে ভারতের কোনও যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে বলা হয়েছে, ভারত এবং চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। সেই পথেই চলবে বেজিং। আকবরুদ্দিন আজ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা চুপচাপ কাজ শুরু করে দিয়েছি। তবে সীমান্তের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বীর সেনারা সেখানে রয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন