রাহুল আজ মোদীর মুখোমুখি

ভোট পর্বে গাঁধী পরিবারকে বিঁধে, বিশেষ করে প্রয়াত রাজীব গাঁধীকে টেনে মোদী যে ভাবে আক্রমণ শানিয়েছিলেন, তার পরে কেমন হবে দু’জনের সাক্ষাৎ তা নিয়ে জোর কৌতূহল রাজধানীতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০১:৫২
Share:

ছবি: এপি।

মুখোমুখি হবেন নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গাঁধী। আগামিকাল রাষ্ট্রপতিভবনে প্রধানমন্ত্রীর শপথে। কংগ্রেস আজ জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে যাবেন রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহেরা। ভোট পর্বে গাঁধী পরিবারকে বিঁধে, বিশেষ করে প্রয়াত রাজীব গাঁধীকে টেনে মোদী যে ভাবে আক্রমণ শানিয়েছিলেন, তার পরে কেমন হবে দু’জনের সাক্ষাৎ তা নিয়ে জোর কৌতূহল রাজধানীতে।

Advertisement

এটা স্পষ্ট, সব কিছু ঠিক নেই কংগ্রেসে। ১২, তুঘলক লেনের বাড়ির সামনে বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ থেকে শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় অভিযুক্ত জগদীশ টাইটলারও হাজির। সকলের এক রা, রাহুল গাঁধী ইস্তফা তুলে নিন। লড়াই করুন, সঙ্গে আছি। রাজস্থান, তামিলনাড়ু কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রস্তাব নিয়েছেন, রাহুলের ইস্তফা দেওয়া উচিত নয়। দিল্লির জেলা স্তরের এক নেতা অনশনে বসেছেন। কিন্তু বরফ এতে গলবে কি?

রাহুলের বাড়ির সামনে দিল্লির নেতা-কর্মীদের জুটিয়ে শীলা দীক্ষিত ভিতরে গিয়েছিলেন। বেরিয়ে শুধু বললেন, ‘‘বার্তা পৌঁছে দিয়েছি, ইস্তফা দেবেন না। পদে না থাকলে আমাদেরই কষ্ট হবে।’’ অপেক্ষারত দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা না-করেই বেরিয়ে যান শীলা। দলীয় সূত্রের খবর, রাহুল দেখাই করতে চাননি শীলার সঙ্গে। আগামিকাল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তিনিও মনে করেন, রাহুলের ইস্তফা দেওয়া উচিত নয়। অন্য শরিক, এমনকি বাইরের দলের নেতারা এ কথা বলেছেন আগেই।

Advertisement

দলীয় সূত্র বলছে, রাহুল ইস্তফায় অনড়। এমনকি শেষ পর্যন্ত রাহুল যে কাল মোদীর শপথে যাবেনই, এমনটি কেউ বুক ঠুকে বলতে পারছেন না।

কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, ‘‘তাঁর বিকল্প না-পাওয়া পর্যন্ত পদে থাকতে রাজি হয়েছেন রাহুল। কিন্তু বিকল্প মিলবে কী ভাবে? অন্য কেউ দায়িত্ব নিতে রাজি নন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার কথাও তোলা যাচ্ছে না। রাহুল স্পষ্ট জানিয়েছেন, গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে খুঁজতে হবে।’’

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ কয়েকটি বিকল্প পথ নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। তার একটি হল, কার্যনির্বাহী সভাপতি নিয়োগ। যিনি রোজকারের কাজের থেকে অব্যাহতি দেবেন সভাপতি রাহুলকে। সভাপতি সংগঠনে নজর দিতে পারবেন। ইন্দিরা গাঁধী এক সময় কমলাপতি ত্রিপাঠীকে কার্যনির্বাহী সভাপতি নিয়োগ করেছিলেন। দক্ষিণে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর। রাহুল নিজেও নানা রাজ্যে এই সূত্র প্রয়োগ করেছেন আগে। প্রবীণে-নবীনে মিলিয়ে ‘সভাপতিমণ্ডলী (প্রেসিডিয়াম)’ তৈরি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। দলের নিত্যদিনের কাজ চালানোর জন্য। সে ক্ষেত্রে সভাপতিকে সকলের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য কংগ্রেসে একটি সংশোধন আনতে হবে। কিন্তু দলের এক নেতার কথায়, ‘‘রাহুলের বদলে কোনও এক জনকে বিকল্প সভাপতি পদে না-পাওয়া গেলে, এই বিকল্প ভাবা যেতেই পারে। নেতৃত্ব নিয়ে শরদ পওয়ারেরা প্রশ্ন তোলার পরেও সনিয়া গাঁধী এ ভাবেই পদ ছাড়ার জেদ ধরেছিলেন। সমস্যা হল, রাহুল তো তাঁকে রেখে নতুন কমিটি সাজানোর প্রস্তাবও মানছেন না!’’

৩১ তারিখ বিরোধী দলগুলিকে বৈঠকে ডেকেছে কংগ্রেস। পর দিন কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠক। সেখানে রাহুলের নেতৃত্বের প্রসঙ্গ উঠবে। লোকসভায় দলকে নেতৃত্ব দিতে অবশ্য আপত্তি করেননি রাহুল। তিনি শুধু দলের সভাপতির পদ ছাড়তে চান। দাদা বিশেষ কারও সঙ্গে দেখা না করলেও বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা উত্তরপ্রদেশের নেতাদের নিয়ে বৈঠক শুরু করেছেন। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে দলের বিপর্যয়ের কারণ পর্যালোচনার পাশাপাশি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দলের রণকৌশল স্থির করার প্রাথমিক পর্বের কাজটি শুরু করে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন