সকালে রেডিওয় দেশবাসীকে ‘মনের কথা’ শোনাবেন নরেন্দ্র মোদী। রাহুল গাঁধী যাকে বলেন, ‘একতরফা প্রবচন’! আর তার কয়েক ঘণ্টা পরে, দুপুরে উত্তরপ্রদেশে সভা করে রাষ্ট্রকে ‘প্রবচন’ শোনাবেন আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত।
মেরঠে রবিবার সঙ্ঘপ্রধানের এই সভা ঘিরে সাজোসাজো রব মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের অন্দরে। রাজ্যের সাড়ে ছ’শো একর জমিতে সভার আয়োজন করা হয়েছে! সভায় আসার জন্য ৩ লক্ষ নাম নথিভুক্ত করানো হয়েছে বলে দাবি সঙ্ঘ-নেতাদের। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, সাম্প্রতিক কালে সঙ্ঘের উদ্যোগে সবচেয়ে বড় জনসভা হতে চলেছে এটি। আর এই এত আয়োজনের মূল লক্ষ্য একটাই— ২০১৯-এর ভোটের দিকে তাকিয়ে দলিত-কৃষক ক্ষত মেরামতের।
বিরোধীরা অভিযোগ তুলছে, ভাগবতের সভার জন্য সরকারি জমি বিনামূল্যে দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। ক’দিন আগেই ভাগবত তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। কেন্দ্রে মোদী ক্ষমতায় আসার পরে দেশের নানা প্রান্তে দলিত নিগ্রহের ঘটনা বেড়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার আসার পরে। বিশেষত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। এ নিয়ে দলিতদের অন্দরে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। সেই ক্ষোভ কমানোই এখন সঙ্ঘের মূল লক্ষ্য।
বিজেপি সূত্রের মতে, সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, গ্রাম-কৃষক বিজেপির থেকে দূরে সরছে। এটা সঙ্ঘের কাছেও উদ্বেগের। সে কারণে গোবলয়ের সবথেকে বড় রাজ্যে তারা পুরোদস্তুর মাঠে নেমেছে। লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের ফলের উপরে অনেকটাই নির্ভর করবে মোদীর ভবিষ্যৎ।
গেরুয়া শিবিরের ভিতরের খবর, হিন্দু ভোটকে একছাতার তলায় আনাই লক্ষ্য সঙ্ঘের। রাহুল গাঁধী, মায়াবতীর কবল থেকে দলিত ভোটকে ফের হিন্দুত্বের ছাতার তলায় নিয়ে আসাই সঙ্ঘের লক্ষ্য। এরই সঙ্গে নজরে গ্রাম ও কৃষক। গুজরাতের ভোটে খোদ মোদীর গড়ে গ্রাম মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেকারণেই সক্রিয় হতে হচ্ছে সঙ্ঘকে।
বিজেপি মুখে বলছে, আরএসএস সামাজিক সংগঠন। এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। বাস্তব হল, সঙ্ঘপ্রধানের সভায় আমন্ত্রিতদের মধ্যে একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি থাকবেন মোদী সরকারের একাধিক মন্ত্রীও।