প্রতীকা ছবি।
হাওয়া অফিসের নির্ঘণ্ট মানলে হাতে আরও দিন ছয়েক সময় ছিল। তার আগেই আন্দামান-নিকোবরে ঢুকে পড়ল মৌসুমি বায়ু। দিল্লির মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, আনুষঙ্গিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিস্থিতি অনুকূল থাকায় আগামী দিন তিনেকের মধ্যে ওই দ্বীপপুঞ্জে আরও ছড়িয়ে পড়বে বর্ষা। এতটাই যে, আগামী কয়েক দিন আন্দামানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
তাতে অবশ্য মূল ভারতীয় ভূখণ্ডের উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কেননা আন্দামানে আবির্ভূত হলেও মূল ভূখণ্ডে বর্ষা এখনই আসছে না। আসলে কেরল দিয়ে মূল ভারতভূমিতে ঢোকে বর্ষার অন্য একটি শাখা। স্বাভাবিক নিয়মে চললে কেরল হয়ে মৌসুমি বায়ুর ভূখণ্ডে পদার্পণের দিন ১ জুন। তার পরে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এ রাজ্যে বর্ষার পৌঁছতে পৌঁছতে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।
সেটা কি এ বার নিয়ম মেনে হবে?
সেই বিষয়ে অবশ্য এখনই কোনও নির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে রাজি নন আবহবিদেরা। কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘কেরল দিয়ে বর্ষা ঢুকতে এখনও অনেক দিন বাকি। এখনই এই নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ গত বছরের হিসেব দেখিয়ে আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন, বর্ষা সে-বার মোটামুটি ঠিক সময়েই আন্দামানে ঢুকেছিল। কিন্তু তার পরে আবহাওয়ার মতিগতি বিগড়ে যাওয়ায় মৌসুমি বায়ুর যাত্রাপথও যায় বদলে। ১ জুনের বদলে সে কেরলে ঢুকেছিল ৮ জুন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে ঢুকতে জুনের তৃতীয় সপ্তাহ গড়িয়ে গিয়েছিল।
এ বছর অবশ্য বর্ষা নিয়ে মৌসম ভবন আশাবাদী। এপ্রিলে জারি করা বর্ষার প্রথম দফার পূর্বাভাসে তারা জানিয়েছে, এ বার ভারত মহাসাগরের পরিস্থিতি বর্ষার অনুকূল। ফলে দেশ জুড়ে স্বাভাবিক বর্ষণ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এমনকী মোট বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের ৯৬ শতাংশ হবে বলেও আবহবিজ্ঞানীদের অনুমান। কেউ কেউ বলছেন, বর্ষার মরসুমের শেষ দিকে প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তৈরি হতে পারে ‘এল নিনো’ (প্রশান্ত মহাসাগরের জলপ্রবাহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়াই বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ। জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সেই ভৌগোলিক-প্রাকৃতিক প্রবণতার নাম এল নিনো বা দুরন্ত ছেলে।) পরিস্থিতি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের আবহবিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, সেই পরিস্থিতি খুব মারাত্মক হবে না। ফলে তা বর্ষার উপরে খুব বেশি প্রভাবও ফেলবে না।