জুলাইয়ের শেষে এসে মালুম হচ্ছে বর্ষা

উত্তরের পরে এ বার দক্ষিণে! জুলাইয়ের শেষে এই তল্লাটে গা-ঝাড়া দিল বর্ষা! সোমবার সকাল থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে দিনভর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৬
Share:

দক্ষিণে এল বর্ষার আমেজ। বনগাঁয় নির্মাল্য প্রামাণিকের তোলা ছবি।

উত্তরের পরে এ বার দক্ষিণে! জুলাইয়ের শেষে এই তল্লাটে গা-ঝাড়া দিল বর্ষা!

Advertisement

সোমবার সকাল থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে দিনভর। আলিপুর হাওয়া অফিস বলছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী কয়েক দিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে জোরালো বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গে গত কয়েক দিন ধরে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। আজ, মঙ্গলবার থেকে অবশ্য সেখানে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমতে পারে।

উত্তর এবং পূর্ব ভারতে জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হলেও বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং দক্ষিণবঙ্গে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত বর্ষার ঘাটতি ছিল ৩০ শতাংশ। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তৃতীয় সপ্তাহের শেষে সেই ঘাটতি ১২ শতাংশে নেমেছিল। এই পর্যায়ের এই জোরালো বৃষ্টির হাত ধরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ঘাটতিও মিটতে পারে বলে জানাচ্ছে মৌসম ভবন। এর সুফল পেতে পারেন চাষিরাও।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, এখন গোটা রাজ্যেই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। বঙ্গোপসাগরের উপরে সক্রিয় রয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখাও। ফলে জোরালো বর্ষার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ‘‘এ দিন কলকাতা ও লাগোয়া এলাকাগুলিতে ভারী বৃষ্টির কারণও এই বর্ষার সক্রিয়তা। আগামী ক’দিনও কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে,’’ বলছেন গোকুলবাবু।

শহরে সকাল থেকে টানা চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর এ দিন সকাল সাতটা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত মহানগরীর পশ্চিম অংশে কোথাও কোথাও ৯০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই। জুনে বর্ষার ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার ফলে ধানের বীজতলা তৈরিতে সমস্যায় পড়েছিলেন চাষিরা। এ বার জুলাইয়ের গোড়া থেকে কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় বীজতলার তৈরির সেই সঙ্কট কিছুটা কেটেছে। এই দফার বৃষ্টিতে তা আরও কিছুটা কাটবে বলেও মনে করছেন কৃষি-বিশেষজ্ঞরা।

বস্তুত, মে মাসে বঙ্গোপসাগরে হাজির হওয়া ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের বড় অংশে বর্ষার ছন্দ কেটে গিয়েছিল। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা হাজির হয় ৮ জুন। কিন্তু এ বার দেশেই বর্ষা ঢুকেছে ৮ জুন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছতে ১৭ জুন হয়েছে তার। দক্ষিণবঙ্গে ঢোকার পরেও জুন মাসে সে ভাবে বর্ষা মেলেনি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর মন্তব্য, ‘‘বর্ষা ঢোকার পরে তাকে জোরালো করতে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু জুনে তা মেলেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন