বেদম মার শাশুড়িকে, সিসিটিভি দেখে বৌমা গ্রেফতার

ছোট বিছানায় শীতে জড়সড় হয়ে বসে এক বৃদ্ধা। গায়ে জড়ানো লেপ। হঠাৎই পিছন থেকে প্রায় দৌড়ে এসে, চটি সমেতই বিছানায় উঠে পড়লেন এক মহিলা। তার পর কখনও ডান হাত, কখনও বাঁ হাত দিয়ে এলোপাথাড়ি থাপ্পড়। চড় মারতে মারতে নিজের জামার মধ্যে থেকে একটা কাপড় বার করলেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বিজনৌর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৪:১১
Share:

শাশুড়িকে মারছেন গৃহবধূ। সিসিটিভি ফুটেজের সেই দৃশ্য।

ছোট বিছানায় শীতে জড়সড় হয়ে বসে এক বৃদ্ধা। গায়ে জড়ানো লেপ। হঠাৎই পিছন থেকে প্রায় দৌড়ে এসে, চটি সমেতই বিছানায় উঠে পড়লেন এক মহিলা। তার পর কখনও ডান হাত, কখনও বাঁ হাত দিয়ে এলোপাথাড়ি থাপ্পড়। চড় মারতে মারতে নিজের জামার মধ্যে থেকে একটা কাপড় বার করলেন তিনি। তার পরে বসে থাকা ওই মহিলার গলায় পেঁচিয়ে, কাপড়ের দুই প্রান্ত বাঁ হাতে শক্ত করে ধরে লাফিয়ে নেমে পড়লেন খাট থেকে। ফাঁসের বাঁধন ধরে রেখেই এ বার কাজে লাগালেন ডান হাত। চুলের মুঠি ধরে খাটের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত, ঝাঁকুনি যেন আর থামতেই চায় না। কিছু ক্ষণ পরে অত্যাচার থামল বটে। তবে শেষ হল না। এ বার রান্নাঘর থেকে একটা নোড়া এনে পিঠে-মাথায় দমাদ্দম কয়েক ঘা। চড়-থাপ্পড়ের এই বন্যা এত ক্ষণ ধরে চুপ করে সইছিলেন বৃদ্ধা। হাত থেকে নোড়া পড়ে যেতে বাধা দেওয়ার সুযোগ পেলেন। প্রাণ বাঁচাতে কোনও মতে চেপে ধরলেন আক্রমণকারীর হাত। তা-ও সেটা ওই এক বারই।

Advertisement

কয়েক মিনিটের এই ভিডিও দেখেই শিউরে উঠছেন সকলে। কারণ আক্রান্ত ও আক্রমণকারী সম্পর্কে শাশুড়ি-বৌমা। বৃদ্ধার বয়স প্রায় ৭০। শাশুড়ির উপর বীভৎস অত্যাচার ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবারই তাঁর পুত্রবধূ সঙ্গীতা জৈনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভিডিওটি অবশ্য গত ৫ জানুয়ারির। পুলিশ জানিয়েছে, সঙ্গীতা ও তাঁর স্বামী সন্দীপের বিয়ে হয়েছে সাত বছর আগে। তার পর থেকে ওই পরিবারে অশান্তি লেগেই আছে। আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলাও চলছে তাদের। সঙ্গীতার অভিযোগ, প্রায়ই পণের জন্য অত্যাচার করতেন সন্দীপের বাড়ির লোক। ৪ জানুয়ারি এই অভিযোগেই সন্দীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সন্দীপ জানিয়েছেন, স্ত্রী-র অভিযোগ যে মিথ্যে, সে সময় বহু বার বলার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর পাশে তখন দাঁড়াননি কেউই। তাই প্রমাণ জোগাড়ের জন্য স্ত্রীকে না জানিয়ে মায়ের ঘরে সিসিটিভি বসান তিনি। সন্দীপ যে দিন গ্রেফতার হন, বৌমার অত্যাচারের ভিডিও সিসিটিভিতে ধরা পড়ে ঠিক তার পরের দিনই। এই ঘটনা স্থানীয় থানায় জানালেও লাভ হয়নি বলে দাবি সন্দীপের। শেষে গত কাল স্থানীয় এসপি-কে জানান তিনি। ভিডিওটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইলেও নিজের কাজে কিন্তু মোটেই অনুতপ্ত নন সঙ্গীতা। তাঁর বরং পাল্টা দাবি, ‘‘পুরোটাই সাজানো ঘটনা। শাশুড়ি যখন ইলেট্রিক শক দিতেন, শ্বশুর যখন ধর্ষণ করতেন— সেই ভিডিও তো তখন কেউ তুলে রাখেনি!’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন