—ফাইল চিত্র।
হাসপাতালে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি করিয়ে দিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। নাড়ি দেখার পরেই হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএমও (চিফ মেডিক্যাল অফিসার) জানিয়ে দিয়েছিলেন, বছর একচল্লিশের ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। তাঁর দেহ যেন ময়না-তদন্ত করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকের নির্দেশ মতো সাদা চাদরে ঢেকে সেই মৃতদেহ লাশ কাটা ঘরে নিয়ে যাওয়ার সময় চমকে ওঠেন হাসপাতালের দুই ওয়ার্ড বয়। লিফটে করে দেহ দোতলায় নিয়ে যাওয়ার আগে তাঁরা দেখেন, পেট ওঠা-নামা করছে সেই রোগীর। তৎক্ষণাৎ ওই ব্যক্তির মুখ থেকে চাদর সরিয়ে তাঁরা আবিষ্কার করেন, বেঁচে রয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে মুম্বইয়ে। হাসপাতালের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই রোগীর বেঁচে থাকার খবর পেয়েই লাশ কাটা ঘরে ছুটে যান সিএমও রোহন রোহেকর। অভিযোগ, নিজের হাতে লেখা ওই ব্যক্তির মৃত্যু রিপোর্ট ছিঁড়েও ফেলেন তিনি। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে কয়েক ঘণ্টা তাঁর দেহ অন্যত্র রাখার পরে ময়না-তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা। কোনও ভাবে যদি কারও দেহে প্রাণ ফিরে আসে, সেটা দেখার জন্যই এই ব্যবস্থা। একে বলে ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’। কিন্তু রোহেকর অপেক্ষা না করে কেন তড়িঘড়ি দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়ে দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কাল সকালে সিওন থানায় একটি ফোন আসে। তাতে বলা হয়, সুলোচনা শেট্টি মার্গের কাছে এসটি বাসস্ট্যান্ডে এক ব্যক্তি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। মিনিট দশেকের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিছু পরে হাসপাতাল থেকে তাদের কাছে খবর যায়, মারা গিয়েছেন সেই ব্যক্তি। নিয়মমাফিক সেই মৃত্যুর রিপোর্ট করতে এসে হতভম্ব হয়ে যান সিওন থানার পুলিশ অফিসাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, যে ‘মৃত’ ব্যক্তির রিপোর্ট করতে তাঁরা সিওন হাসপাতালে গিয়েছিলেন, তাঁকে ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, ওই ব্যক্তির কানে সংক্রমণ হয়েছে। অপুষ্টিতেও ভুগছেন তিনি। ওই রোগীর পরিচয় জানা যায়নি।
সিওন থানার এক সিনিয়র অফিসার যেশুদাস গোরদের কথায়, ‘‘এক জন চিকিৎসকের এই ধরনের গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না। কী ভাবে এক জন জীবিত ব্যক্তিকে তিনি মৃত ঘোষণা করে দিলেন তা খুবই আশ্চর্যের।’’