(ইনসেটে) অপহরণকারী রোহিত আর্য। এই স্টুডিয়োতেই শিশুদের পণবন্দি করেন তিনি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মুম্বইয়ের স্টুডিয়োয় শিশুদের পণবন্দির ঘটনায় গুলিতে অপহরণকারী রোহিত আর্যের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই এ বার সেই প্রশ্নের জবাব এবং ব্যাখ্যা দিল তারা। পুলিশের দাবি, অপহরণকারীকে দু’ঘণ্টা ধরে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। তাঁর কী কী দাবি রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। পণবন্দি এক শিশুর অভিভাবক রোহিতের কাছে প্রাণভিক্ষা করেন। তাঁর কন্যার শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, সে কথাও জানানো হয় অপহরণকারীকে। কিন্তু কোনও কথার উত্তর দেননি তিনি। চুপ করে ছিলেন।
মুম্বইয়ের পুলিশ প্রধান দেবেন ভারতীর দাবি, তাঁরা প্রথম থেকেই অপহরণকারীকে কথার মাধ্যমে নানা ভাবে নিরস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথম গুলি চালান অপহরণকারীই। তখন আত্মরক্ষার তাগিদে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। পুলিশ প্রধানের কথায়, ‘‘এতগুলি শিশুর জীবন সংশয় ছিল। তাদের জীবন নিয়ে তো খেলতে দিতে পারি না! আত্মরক্ষার তাগিদেই গুলি চালিয়েছে আমাদের দল। আর কোনও উপায় ছিল না।’’ আরও এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, পণবন্দি শিশুদের নিরাপত্তাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের সুরক্ষিত বার করে আনাই ছিল প্রথম লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যপূরণ প্রোটোকল মেনেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ডিসিপি দত্তা নালাওড়ে আবার বলেছেন, ‘‘খুব চ্যালেঞ্জিং অভিযান ছিল। আমরা আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। শিশুদের বাঁচানোই আমাদের লক্ষ্য ছিল।’’
রোহিতের উপর গুলি চালানো নিয়ে ইতিমধ্যেই পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন পুলিশ গুলি চালাল, সমান্তরাল ভাবে সেই চর্চাও হচ্ছে। তাদের ভূমিকা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন গুলি চালাতে হল, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে মুম্বই পুলিশ। যদিও মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস পুলিশের উদ্ধারকাজের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। তা শেষ হলেই আরও অনেক তথ্য জানা যাবে।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার পওয়াইয়ের একটি স্টুডিয়োও অডিশন ছিল শিশুদের। সেই স্টুডিয়োও ছিলেন রোহিত। তিনিই অডিশনের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু রোহিত ১৭ শিশুকে পণবন্দি করে হুমকি দিতে থাকেন। তাঁর কয়েকটি দাবিদাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। পুলিশ তাঁকে নিরস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু দাবি, পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান রোহিত। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতে গুরুতর আহত হন রোহিত। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।