শেষ হাসি হাসলেন এন বীরেন সিংহই। —ফাইল চিত্র।
মণিপুর বিধানসভায় আস্থা অর্জন করল বিজেপি। ৬০ আসনের বিধানসভায় ৩২টি ভোট পেলেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। ফলে সিলমোহর পড়ল মণিপুরের প্রথম বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের স্থায়ীত্বে। বিজেপি-র চেয়ে ৭টি আসন বেশি পেয়েও সরকার গড়তে পারেনি কংগ্রেস। আস্থা ভোটে বিজেপি সরকারকে পরাস্ত করার চেষ্টায় ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছতে পারল না কংগ্রেস।
১৫ মার্চ মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন এন বীরেন সিংহ। প্রাক্তন ফুটবলার বীরেন কিন্তু আগে কংগ্রেসেই ছিলেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। সাংবাদিকতাও করেছেন। এ হেন বীরেন সিংহ ২০১৬-র অক্টোবরে বিজেপিতে যোগ দেন। মণিপুরে বিজেপি-র কোনও উল্লেখযোগ্য শক্তিই ছিল না সে সময়। বিধানসভায় প্রতিনিধিত্বও ছিল না। কিন্তু চমকে দিয়ে সেই বিজেপিই এ বার ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় ২১টি আসন দখল করে। কংগ্রেস ২৮টি আসন পেয়ে বৃহত্তম দল হয় এ বারও। কিন্তু নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা কংগ্রেসও পায়নি। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দ্রুত মণিপুরের ছোট দলগুলিকে কাছে টানতে ময়দানে নামে বিজেপি। এনপিএফ-এর ৪ এবং এনপিপির ৪ বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনে রাজি হন। কেন্দ্রে বিজেপির সহযোগী রামবিলাস পাসোয়ানের এলজেপি ১টি আসন পেয়েছে। তিনিও স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির দিকে থাকেন। কিন্তু এই ৯ বিধায়ককে মিলিয়ে ৩০-এ পৌঁছচ্ছিল বিজেপি। ম্যাজিক ফিগার ৩১। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের এক মাত্র তৃণমূল বিধায়ক এবং কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসা আর এক বিধায়ক বিজেপির পাশে দাঁড়ায়। এবং এই গোটা বন্দোবস্তই সেরে ফেলা হয় মণিপুরে ভোটের ফল প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। ৩২ জন বিধায়কের সমর্থনের চিঠি বিজেপির সঙ্গে থাকায় বিজেপিকেই সরকার গড়তে ডাকেন রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থেকেও মণিপুরে লক্ষ্যে পৌঁছে গেল বিজেপি। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এন বীরেন সিংহ শপথ গ্রহণ করলেও কংগ্রেস হাল ছাড়েনি। আস্থা ভোটে সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন ওক্রামরা। নিজেদের ২৮ জন বিধায়কের মধ্যে যে ১ বিধায়ক দল ছেড়ে বিজেপির দিকে চলে গিয়েছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে বাকি ২৭ জনকেই ইম্ফলে এক বিধায়কের বাড়িতে গৃহবন্দি করে ফেলেছিল কংগ্রেস। আর বিজেপি আরও এক ধাপ এগিয়ে মণিপুর থেকেই সরিয়ে দিয়েছিল সরকারের পক্ষে থাকা বিধায়কদের। অসমের গুয়াহাটিতে একটি হোটেলে রাখা হয়েছিল তাঁদের।
আরও পড়ুন: মাত্র কয়েকটা মাসেই অসামান্য রাজনৈতিক নবজন্ম রীতা বহুগুণার
সোমবার মণিপুর বিধানসভায় সব ভোট হিসেব মতোই পড়েছে। যে ৩২ জন বিধায়কের সমর্থনের চিঠি রাজ্যপালের কাছে জমা দিয়েছিলেন এন বীরেন সিংহ, সেই ৩২ জনের সমর্থনই এ দিন পেয়েছেন তিনি। ফলে আগামী ছ’মাস কোনও ফাঁড়া নেই এন বীরেন সিংহের সরকারের সামনে।
আরও পড়ুন: ফুল-মিষ্টি-স্লোগানে ভাসছে যোগীর গ্রাম, আনন্দে খেতেই ভুলে গিয়েছিল