হাফলং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে টাকা চেয়ে জঙ্গি গোষ্ঠীর চিঠির জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাফলঙের সমস্ত ডাক্তারদের মধ্যে। সম্প্রতি হাফলং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে এনএসসিএন (খাপলাং) গোষ্ঠীর নাম করে চিঠি আসে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশ প্রশাসনও। বিশেষ করে নাগা জঙ্গি গোষ্ঠী খাপলাঙের নাম এর সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় ডাক্তারদের মধ্যে আতঙ্ক চরমে উঠেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই হাফলং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের টার্গেট করে আসছে জঙ্গিরা। নব্বইয়ের দশকে হাফলং সরকারি হাসপাতালের তৎকালীন হাসপাতাল সুপারকে তাঁর সরকারি আবাসন থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। মুক্তিপণ নিয়েও তাঁকে খুন করে লাশ হাসপাতালের সামনে ফেলে যায় জঙ্গিরা। এ ছাড়া, আজ থেকে চার বছর আগে প্রকাশ্য দিনের আলোয় হাফলং সরকারি হাসপাতালের এক ডাক্তারকে তাঁর সরকারি আবাসন থেকে বন্দুকের নলের মুখে তুলে নিয়ে গেলেও পরে ওই ডাক্তারকে ছেড়ে দেয় জঙ্গিরা।
জঙ্গিদের ভয়ে ডিমা হাসাও জেলায় এক সময় ডাক্তাররা আসতেই চাইতেন না। কিন্তু ২০০৯ সালে পাহাড়ি জেলার প্রধান জঙ্গি সংগঠন ডিএইচডি অস্ত্র ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরে এলে পাহাড়ি জেলায় শান্তি ফিরে আসে। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু কিছু দুষ্কৃতী জঙ্গিদের নাম করে ডাক্তারদের কাছে টাকা চেয়ে হুমকি পত্র পাঠাচ্ছে। এ নিয়ে অনেকবার হাফলং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মীরা প্রশাসন ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। যার ফলে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা সব সময়েই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। রাতে কোনও মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও অনেক সময় ডাক্তাররা কোয়ার্টার থেকে হাসপাতালে আসতে চান না।
এমনিতে হাসপাতাল চত্বর সমাজবিরোধীদের ঘাঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতাল চত্বর বা ডাক্তারদের আবাসনে কোন সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় দুষ্কৃতীরা যে কোনও সময় ডাক্তারদের হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য এখানে একটি পুলিশ চৌকি করা হয়েছে। কিন্তু তাদের উপরেও আস্থা রাখতে পারছেন না কর্মীরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসন যদি কডঞা নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে তবে ডাক্তাররা গণ-ছুটিতে যেতে পারেন বলেও হাসপাতাল সুপারকে জানিয়ে দিয়েছেন।