বারবার মোটা টাকা আনাতেন ‘জামাই’

আগে দু’দফায় বিমান ভাড়া করে হরিয়ানা থেকে নির্বিঘ্নে মোটা টাকা ডিমাপুরে আনিয়েছিলেন আনাতো জিমোমি। নাগাল্যান্ডের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ নেফিয়ু রিওর জামাই আনাতো।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

আগে দু’দফায় বিমান ভাড়া করে হরিয়ানা থেকে নির্বিঘ্নে মোটা টাকা ডিমাপুরে আনিয়েছিলেন আনাতো জিমোমি। নাগাল্যান্ডের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ নেফিয়ু রিওর জামাই আনাতো। বিপত্তি বাধল তৃতীয় বারে। গত ২২ তারিখ ডিমাপুর বিমানবন্দরে পুরনো পাঁচশো-হাজারের নোটে মোট সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে ধরা পড়লেন তাঁর ঘনিষ্ঠ হরিয়ানার ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিংহ। খবর পেয়ে আনাতো এসে প্রভাব খাটিয়ে তাঁকে আয়কর অফিসারদের হাত থেকে ছাড়িয়েও নিয়ে গেলেন।

Advertisement

নিজের কোম্পানির লেটারহেডে প্যান জানিয়ে আনাতোর দাবি, সব তাঁর ব্যবসার টাকা। হরিয়ানায় জমি কিনতে ওই টাকা পাঠিয়েছিলেন। জমি কেনা বাতিল হওয়ায় অমরজিৎকে দিয়ে তা ফেরত আনাচ্ছেন তিনি। কিন্তু পুলিশ ও আয়কর দফতরের সন্দেহ, বাতিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে কালো টাকার পাহাড় সাদা করানোর জন্যই পাঠানো হচ্ছিল। আনাতো তা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেলছিলেন। কিন্তু উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা হিসেবে সংবিধানে আয়কর ছাড়ের বর্ম থাকায় শেষ পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গিয়েছেন তিনি।

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের পরে আনাতো তাঁর নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অনিল সুদ নামে গুরুগ্রামের এক ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে সাত কোটি টাকা পাঠান। তার পর গত ১২ ও ১৪ নভেম্বর চার্টার্ড বিমানেই মোটা টাকা আসে আনাতোর কাছে। অনিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। দু’জনের অ্যাকাউন্টই সাময়িক ভাবে ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ২২ তারিখ হিসারের বেসরকারি ফ্লাইং ক্লাব থেকে বিমানটি উড়েছিল। তাই ওড়ার সময়ে তল্লাশিতে ধরা পড়েনি।

Advertisement

টাকা-সহ অমরজিৎকে ছাড়ানোর পর তাঁকে নিয়ে ওই বিমানেই দিল্লি চলে গিয়েছিলেন আনাতো। রাতে ঘটনা জানাজানির পরে ডিমাপুরের পুলিশ কমিশনার তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু তার পর থেকেই আনাতোকে যাঁরা টাকা ফেরত দিয়েছিলেন, সেই আয়কর অফিসারেরা উধাও। দায় এড়িয়েছে সিআইএসএফ-ও। এর মধ্যেই গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে গত রাতে ডিমাপুরের একটি পেট্রোল পাম্পে রাখা তিনটি ট্রাঙ্ক থেকে ওই টাকা উদ্ধার করে আয়কর দফতর। পুলিশের একাংশের দাবি, আনাতোকে জেরা করেই ওই টাকার হদিস মিলেছে। তার মধ্যে বেশ কিছু জাল নোটও রয়েছে। কিন্তু এর পরেও আনাতো কিংবা অমরজিতের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করেনি দিল্লি পুলিশ। যা দেখে কারও কারও দাবি, রাজনৈতিক চাপে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা চলছে। আনাতোর শ্বশুর রিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ এবং এনডিএ-র অন্যতম শরিক দল এনপিএফের প্রতিষ্ঠাতা। কংগ্রেসের অভিযোগ, কালো টাকা রুখতে মোদী যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তার জন্য কষ্টে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সেখানে বিজেপির জোট-শরিকরাই কালো টাকা সাদা করার ঠিকা নিচ্ছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন