বেখাপ্পা প্রশ্ন করে বিপাকে ফেলতে বারণ বেঙ্কাইয়ার

সক্রিয় থাকা ভাল। কিন্তু অতি উৎসাহে সেমসাইড গোল ভয়ঙ্কর! নিজের দলের সাংসদদের আজ এই সতর্কবাণীই শোনালেন বিজেপি নেতারা। সংসদ চললে ফি-সপ্তাহে সাংসদদের নিয়ে একবার করে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগে এটি হতো সংসদের সেন্ট্রাল হলে। কিন্তু সেখানে কোনও গোপনীয়তা ছিল না। অনেক সময়ই হুটহাট করে ঢুকে পড়তেন অন্য দলের সাংসদরা। অনেকে আড়িও পাততেন।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
Share:

সক্রিয় থাকা ভাল। কিন্তু অতি উৎসাহে সেমসাইড গোল ভয়ঙ্কর!

Advertisement

নিজের দলের সাংসদদের আজ এই সতর্কবাণীই শোনালেন বিজেপি নেতারা।

সংসদ চললে ফি-সপ্তাহে সাংসদদের নিয়ে একবার করে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগে এটি হতো সংসদের সেন্ট্রাল হলে। কিন্তু সেখানে কোনও গোপনীয়তা ছিল না। অনেক সময়ই হুটহাট করে ঢুকে পড়তেন অন্য দলের সাংসদরা। অনেকে আড়িও পাততেন। তাই এ বার সাপ্তাহিক বৈঠকটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সংসদের পাঠাগারের অডিটোরিয়ামে। সেখানে বন্ধ দরজার পিছনে নরেন্দ্র মোদীর এই বার্তা সাংসদদের কাছে পৌঁছে দেন সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে নেপালে গিয়েছেন মোদী। সাংসদদের কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দিতে বেঙ্কাইয়ার বক্তব্য, সংস্কারের বিলগুলি পাশ করাতে এখন সরকারকে অনেক দিক বজায় রেখে চলতে হচ্ছে। এই অবস্থায় সাংসদরা যেন এমন প্রশ্ন না করেন, যাতে খাবি খেতে হয় দল বা মন্ত্রীমশাইদের।

Advertisement

কিন্তু কেন এমন বার্তা? বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “সংসদের গত অধিবেশনেই দেখা গিয়েছে, দলেরই কোনও কোনও সাংসদ এমন প্রশ্ন করছেন, যার উত্তর দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মন্ত্রীদের।” ওই নেতার বক্তব্য, অনেকে কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। সেই ক্ষোভ থেকে কয়েক জন নিজের দলের মন্ত্রীকেই বিপাকে ফেলতে বেখাপ্পা প্রশ্ন করে ফেলছেন। অনেকে আবার স্থানীয় স্তরের বিষয়ে সরব হতে গিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অবস্থানটাই ভুলে যাচ্ছেন! যেমন হরিয়ানায় ভোটের সময় সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরাকে নিয়ে হইচই হয়েছে। এখন যদি হরিয়ানার কোনও বিজেপি সাংসদ এটি নিয়ে ফের শোরগোল শুরু করেন, তা হলে কংগ্রেস ক্ষেপে গিয়ে সংস্কারের বিলগুলিকে সমর্থন না-ও করতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকেই সাংসদদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই প্রশ্ন করুন।

অথচ ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন, বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রের মন্ত্রীদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকুক। যাতে সাংসদরাও নানা বিষয়ে সংসদে সক্রিয় থাকেন এবং মন্ত্রীরা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য হোমওয়ার্ক করেন। কিন্তু সক্রিয় হতে গিয়ে কিছু সাংসদ ‘লক্ষ্মণরেখা’ অতিক্রম করে মন্ত্রীদেরই বিপাকে ফেলছেন। মোদী মন্ত্রিসভার এক শীর্ষ সদস্য বলেন, “সংসদের চলতি অধিবেশনেই বিমা বিল পাশ করানোর চেষ্টা করা হবে। তৃণমূল, বাম, জেডি(ইউ)-এর সাংসদরা যতই ঠেকানোর চেষ্টা করুন, কংগ্রেস-মায়াবতীর মতো দলগুলির সমর্থন পেলে বিল পাশ হয়ে যাবে বলে আশা।” এই অধিবেশনেই পণ্য ও পরিষেবা কর সংক্রান্ত বিলটি পেশ করা হবে। পরের অধিবেশনে তা পাশ করাতে চায় বিজেপি। ওই মন্ত্রীর কথায়, “এ সব কারণেই এখন সব দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। দলের সাংসদদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অবশ্যই দরকার, কিন্তু বাড়াবাড়ি চলবে না।”

ক’দিন আগেই মোদী দলের সাংসদদের নির্দেশ দেন, অধিবেশন চলাকালীন সবাইকে বেলা এগারোটার মধ্যে সংসদে ঢুকতে হবে। যতক্ষণ অধিবেশন চলবে, ততক্ষণ থাকতে হবে। অনেক সময় হঠাৎ করে ভোটাভুটি হয়। আজই যেমন শ্রম বিল নিয়ে রাজ্যসভায় ভোটাভুটি দাবি করে বামেরা। এ সব সময় বিজেপির সাংসদদের থাকা প্রয়োজন। বেঙ্কাইয়া অবশ্য আজ একধাপ এগিয়ে সাংসদদের বলেন, যত দিন সংসদ চলবে, তত দিন সব সাংসদকে রোজ দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির জন্যও সময় দিতে হবে। অধিবেশনের পর সন্ধ্যার সময় অন্তত তিন ঘণ্টা বিধানসভা ভোটের কাজ করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন