নরেন্দ্র মোদী
উত্তরপ্রদেশের বিপুল জয়ের পরেই ‘নতুন ভারত’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ প্রধানমন্ত্রী কার্যত দাবি করলেন, সেই স্বপ্নের ভিতটি তিনি গড়তে চান মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর পথ ধরে।
রেডিওর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আজ দেশবাসীর কাছে মোদীর নতুন আবেদন— ঘুষ ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যান। আরও বেশি ডিজিটাল লেনদেন করুন। সপ্তাহে এক দিন পেট্রোল-ডিজেল ব্যবহার বন্ধ করুন। খাবারের অপচয় করবেন না। আশপাশের গরিবদের সাহায্য করুন। মানুষের হতাশা কাটান। মোদীর মতে, এ ভাবেই তৈরি হবে ‘নতুন ভারত’। এটি কোনও সরকারি প্রকল্প নয়, কোনও রাজনৈতিক দলের ইস্তাহার নয়। সব দেশবাসী নিজের দায়িত্ব পালন করলেই ‘নতুন ভারত’ তৈরি হবে।
স্বচ্ছতা, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছাড়ার মতো আবেদন মোদী আগেই করেছিলেন। আজ তাতে জুড়লেন বাড়তি কিছু আহ্বান। আর বোঝানোর চেষ্টা করলেন, এটিই আসলে গাঁধীজির পথ। মোদীর বক্তব্য, দেশে ফেরার মাত্র দু’বছরের মাথায়, ১৯১৭ সালের ১০ এপ্রিল চম্পারণ সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন গাঁধীজি। তখনও তাঁকে কেউ চিনত না। রাজেন্দ্র বাবু, আচার্য কৃপালনীকে গ্রামে পাঠিয়ে, গরিব-শোষিতকে একজোট করে এমন আন্দোলন তিনি শুরু করেন যে, ইংরেজরাও বুঝে উঠতে পারেনি গাঁধীজির রকম-সকম। মোদীর মতে, এক দিকে ‘সৃজন’ আর এক দিকে ‘সংঘর্ষ’— এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই তার সফল প্রয়োগ করেছিলেন গাঁধীজি। রেডিওতে মোদীর বক্তব্য শুনে এক বিজেপি নেতা বললেন, ‘‘আসলে সুকৌশলে প্রধানমন্ত্রী নিজের কার্যশৈলীই বাতলে দিলেন। বোঝাতে চাইলেন, দেশে ফিরে গাঁধীজি যেমন দু’বছরে বাজিমাত করেছিলেন, তিনি দিল্লি এসে সেটিই করেছেন। সেই সময়ে ইংরেজরা যেমন গাঁধীজির রকম-সকম বুঝতে পারেনি, এখনও কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা মোদীর কৌশল বুঝতে পারছে না।’’ তাঁর মতে, মোদী এ-ও বার্তা দিলেন যে, তিনি প্রথমে একের পর এক আবেগে দেশবাসীকে একজোট করেন, আর সেই কারণেই এগিয়ে থাকেন ভোট-লড়াইয়ে।
এ ভাবেই আজ ফের রামনমবী, মহাবীর জয়ন্তী থেকে ১৪ এপ্রিল অম্বেডকরের জন্মবার্ষিকী পালনের ডাক দিয়েছেন মোদী। ভীম অ্যাপের জনপ্রিয়তার কথা মনে করিয়েছেন, ‘সর্বজন হিতায়, সর্বজন সুখায়’ মন্ত্র আউড়েছেন। সুকৌশলে টেনে এনেছেন ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের উৎসব পালনের প্রসঙ্গ। যেন ২০১৯ সালে তিনি দিল্লিতে ফিরছেন, সে দিকে ইঙ্গিত করেই।